চাপে পিছিয়ে এল জয়পুরিয়া

কলেজ সূত্রের খবর, এ বছর বাণিজ্য বিভাগের প্রথম সিমেস্টারে অনার্স ও জেনারেলে মোট ৬৫৫ জন পড়ুয়া রয়েছেন। তার মধ্যে অনার্স ও জেনারেলে মোট ১৩৪ জনের ৬০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

অবশেষে চাপের মুখে পিছু হটলেন শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায়। রবিবার একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে তিনি জানান, ৬০ শতাংশ হাজিরা না থাকলে কাউকেই যেন পরীক্ষায় বসতে না দেওয়া হয়, এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সেই আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি, পদত্যাগ করা শিক্ষকদের ফিরে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। তবে কলেজের এই ভূমিকায় অসন্তুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কলেজ সূত্রের খবর, এ বছর বাণিজ্য বিভাগের প্রথম সিমেস্টারে অনার্স ও জেনারেলে মোট ৬৫৫ জন পড়ুয়া রয়েছেন। তার মধ্যে অনার্স ও জেনারেলে মোট ১৩৪ জনের ৬০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল না।
সেই মতো তালিকা পাঠানো হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু তার পরে ওই ১৩৪ জনের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র সান্ধ্য বিভাগের ৩২ জনকে ১০ শতাংশ ছাড় দিয়ে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেন অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষের যুক্তি ছিল, কলেজে গোলমালের কারণে সান্ধ্য বিভাগের পড়ুয়ারা অনেকে আসতে পারেনি। তাই ৫০ শতাংশ হাজিরা থাকা ৩২ জনকে হাজিরার ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁদের মধ্যে থেকে ১৮ জনকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়ে দেয়। এর মধ্যেই ১০ শতাংশ উপস্থিতির ছা়ড় দেওয়ার কারণে পদত্যাগ করেন দু’জন শিফ্‌ট ইনচার্জ এবং দু’জন বিভাগীয় প্রধান। সেই খবর জানাজানি হতেই শিক্ষা শিবিরে শোরগোল পড়ে যায়।

এ সবের পরেই রবিবার বিবৃতি দিয়ে ভুল শুধরে নিলেন অশোকবাবু। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘অশান্তির জেরে আমার নেওয়া সিদ্ধান্তে শিক্ষা মহলে প্রশ্ন উঠুক, এটা কাম্য নয়। তাই ন্যূনতম উপস্থিতির নীচে থাকা ছাত্রদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি বাতিলের আবেদন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হল। ছাত্রেরা সহনশীল হোক এবং পদত্যাগী শিক্ষকেরা অভিমান ভুলে পদত্যাগ প্রত্যাহার করুন, এটাই আমার আবেদন।’’ অর্থাৎ, ভুল যে হয়েছিল সেটা স্বীকার করলেও তার দায়ভার ঠেলে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টে। যদিও পদত্যাগী এক শিফ্‌ট ইনচার্জ অনিল সাহা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। বিষয়টি শিক্ষক সংসদে আলোচনা করাই বাঞ্ছনীয়।’’

Advertisement

তবে অধ্যক্ষের এই নতুন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। এক কর্তা বলেন, ‘‘কলেজের এই ভূমিকা হলে তাঁদের প্রতি তো বিশ্বাসই উঠে যাবে।’’

অনলাইনে এক বার কোনও পড়ুয়া পরীক্ষায় বসার অনুমতি পাওয়ার পরে কি সেটা বাতিল করা যায়?

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) দীপক কর বলেন, ‘‘উপস্থিতির বিচারে কোনও পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া বা না দেওয়ার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। তা পারেন শুধু কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে পড়ুয়াদের অ্যাডমিট কার্ড ছেড়ে দেওয়ার আগে কলেজ যদি জানায় যে পরীক্ষার্থীদের তালিকায় কোনও ভুল হয়েছে, সেটা ঠিক করে দেওয়া যায়। তবে আজও এ নিয়ে আমার কাছে কোনও আবেদন আসেনি।’’ অর্থাৎ, এখনও পরীক্ষায় বসার অনুমোদন পাওয়া ১৮ জনের ক্ষেত্রে অ্যাডমিট কার্ড আটকে দেওয়া সম্ভব বলেই ইঙ্গিত দেন তিনি।

পড়ুয়াদের পর্যাপ্ত উপস্থিতি না থাকলেও যে সমস্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়ার কথা ভাববেন, তাঁদের সামনে জয়পুরিয়া কলেজের এই সিদ্ধান্ত বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করছে শিক্ষা শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন