স্কাইওয়াকে ‘ধীরে চলো’

কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কাইওয়াকে ওঠানামা করার জন্য ১১টি এসক্যালেটর এবং চারটি লিফ্‌ট তৈরি করা হচ্ছে। দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে মন্দিরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত স্কাইওয়াক ধরে যাওয়া যাবে। দেশের মধ্যে এমন স্কাইওয়াক এটাই প্রথম বলে দাবি করেছে কেএমডিএ।

Advertisement

সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:১০
Share:

অপেক্ষা: এ পথেই হেঁটে যাওয়া যাবে মন্দিরে। শনিবার, নির্মীয়মাণ স্কাইওয়াক। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

পোস্তার উড়ালপুল-বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক তৈরির কাজে সাবধানে এগোচ্ছে কেএমডিএ। ওই প্রকল্পে কোনও রকম তাড়াহুড়ো করতে চায় না তারা। তাই নির্মাণকাজের নকশা থেকে সমস্ত সরঞ্জাম প্রথমে পরীক্ষা করছেন শিবপুরের ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র (আইআইইএসটি) বিশেষজ্ঞেরা। তার পরে কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘রাইটস’-এর হাইওয়ে ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে পরীক্ষা করানোর পরেই ছাড়পত্র দিচ্ছে কেএমডিএ। সুরক্ষার উপরে এতটা জোর দেওয়া হচ্ছে বলেই বারবার উদ্বোধনের তারিখ পাল্টাতে হচ্ছে বলে দাবি কেএমডিএ-র। তবে সম্প্রতি এক বৈঠকে ঠিক করা হয়েছে, মার্চের প্রথম দিনই স্কাইওয়াকের উদ্বোধন হবে। তার আগে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে নীচের রাস্তা তৈরির কাজ।

Advertisement

কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কাইওয়াকে ওঠানামা করার জন্য ১১টি এসক্যালেটর এবং চারটি লিফ্‌ট তৈরি করা হচ্ছে। দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে মন্দিরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত স্কাইওয়াক ধরে যাওয়া যাবে। দেশের মধ্যে এমন স্কাইওয়াক এটাই প্রথম বলে দাবি করেছে কেএমডিএ।

২০১৫ সালের মার্চ মাসে স্কাইওয়াক তৈরির কাজ শুরু হয়। কথা ছিল, দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ বছর কালীপুজোর আগেই স্কাইওয়াক চালু হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তা হয়নি।

Advertisement

কেন? কেএমডিএ-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, ওই প্রকল্পের বরাত পেয়েছে একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থা। কাজ শুরু করতে তাদের
কিছুটা দেরি হয়। কারণ, প্রকল্পের জমি থেকে দখলদার সরাতে কিছুটা সময় পেরিয়ে যায়। তার পরে এ বছর লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে। তাতেও কাজ থমকে ছিল। সব শেষে স্কাইওয়াকের নির্মাণসামগ্রীর মান পরীক্ষা করার জন্যও অনেকটা সময় চলে যায়। পিছিয়ে যায় প্রকল্পের সময়সীমা।

সম্প্রতি দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ, স্কাইওয়াক তৈরিতে যুক্ত সরকারি সংস্থা এবং ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে একটি বৈঠক হয় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অফিসে। সেখানে মন্দিরের অছি পরিষদের পক্ষে কুশল চৌধুরীও ছিলেন। ঠিক হয়েছে, পয়লা
জানুয়ারি কল্পতরু উৎসবের আগে স্কাইওয়াকের নীচের রাস্তা তৈরি করে ফেলা হবে। আর পয়লা মার্চ স্কাইওয়াক চালু করা হবে।

পোস্তায় বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল কেএমডিএ। নিম্ন মানের জিনিসপত্র ব্যবহার করা থেকে শুরু করে তদারকি নিয়েও গাফিলতির অভিযোগ ওঠে দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে। তার পর থেকে খুবই সতর্ক ভাবে পা ফেলা শুরু করেন কেএমডিএ-কর্তারা। কেএমডিএ-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, স্কাইওয়াকের ক্ষেত্রে নির্মাণকারী সংস্থার তৈরি করা নকশা আইআইইএসটি-র বিশেজ্ঞদের দিয়ে প্রথমে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। তার পরে রাইট্স-এর হাইওয়ে ডিভিশন সেই নকশা ও ইস্পাতের কাঠামো ভাল করে খুঁটিয়ে দেখার পরেই কেএমডিএ কাজের অনুমতি দিচ্ছে।

রাইট্স-এর হাইওয়ে ডিভিশনের গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার তরুণ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা এই প্রকল্পে কাজ করছি। স্কাইওয়াকের নকশা, ইস্পাতের কাঠামো-সহ সব কিছু পরীক্ষা করে তবেই কাজের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।’’ কেএমডিএ সূত্রে খবর, স্কাইওয়াকের মোট খরচ ধরা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা। এই নির্মাণের জন্য যে ১৫৩টি দোকানকে অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে, তাদের প্রত্যেককেই পুনর্বাসন দেওয়া হবে। দোকানঘর তৈরির কাজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন