এখনও অধরা ছিনতাইবাজ

তা-ও আবার দিনের বেলায়! থানা থেকে ৫০ মিটার দূরে দিনের আলোয় ছিনতাই করতে বুক কাঁপছে না দুষ্কৃতীদের। লালবাজারের কর্তাদের দাবি, শহরে সাদা পোশাকের পুলিশের পাশাপাশি টহলরত পুলিশ থাকে সব জায়গায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৬ ০৭:২৬
Share:

শহরে বাড়ছে ছিনতাইয়ের ঘটনা।

Advertisement

তা-ও আবার দিনের বেলায়! থানা থেকে ৫০ মিটার দূরে দিনের আলোয় ছিনতাই করতে বুক কাঁপছে না দুষ্কৃতীদের।

লালবাজারের কর্তাদের দাবি, শহরে সাদা পোশাকের পুলিশের পাশাপাশি টহলরত পুলিশ থাকে সব জায়গায়। প্রশ্ন উঠছে, তা সত্ত্বেও এতটা দুঃসাহসী কেন দুষ্কৃতীরা? প্রশ্ন উঠেছে পুলিশি তৎপরতা নিয়েও। ছিনতাইয়ের পরে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও দুষ্কৃতীর নাগাল পেতে ব্যর্থ পুলিশ।

Advertisement

গত শুক্রবারের ঘটনা। সে দিন দুপুরে মৌলালির রামলীলা উদ্যানের কাছে ফুটপাতে ভোজালির কোপ মেরে এক প্রৌঢ়ের কাছ থেকে ব্যাগভর্তি প্রায় দু’লক্ষ টাকা ছিনতাই করে পালায় এক দুষ্কৃতী। অভিযুক্ত ছিনতাইবাজকে রবিবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে থানার দূরত্ব মেরেকেটে ৫০ মিটার।

পুলিশের ভূমিকার পাশাপাশি ওই এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় বিমা সংস্থার কর্মী কে ডি সিংহ সে দিন মৌলালির অফিস থেকে হেঁটে ফিলিপস মোড়ের কাছে একটি ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে টাকা ভর্তি ওই ব্যাগ। রামলীলা উদ্যানের কাছে এক দুষ্কৃতী পিছন থেকে তাঁর মাথা ও হাতে ভোজালির কোপ মেরে হাত থেকে টাকাভর্তি ওই ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। আক্রান্ত কে ডি সিংহ বর্তমানে মৌলালির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। রবিবার সকালে তিনি নার্সিংহোমে বসে বলেন, ‘‘তিরিশ বছর ধরে এ ভাবেই ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিচ্ছি। এই প্রথম এমন দুর্ঘটনা ঘটল।’’ থানার ৫০ মিটারের মধ্যেও যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তা হলে কী করে নিশ্চিন্তে থাকবেন শহরবাসী? প্রশ্ন তুলেছেন আহত প্রৌঢ়ই।

ঠিক তার আগের দিনই শহরের দু’টি ভিন্ন জায়গায়, সকাল সাড়ে আটটা-ন’টা নাগাদ দু’টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রথম ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে কাশীপুরের উদ্যানবাটির কাছে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই জোড়াবাগান থানা এলাকার কোম্পানি বাগানে আবার একটি ছিনতাই হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই দু’জন মহিলার কাছ থেকে গলার হার ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা। দু’টি ক্ষেত্রেই ছিনতাইবাজেরা মোটরবাইকে করে এসেছিল। তবে দ্বিতীয় ছিনতাইয়ের পরেই কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা এক যুবক ঘটনাটি দেখতে পেয়ে তাড়া করেন ছিনতাইবাজদের।

পরে পুলিশই জানিয়েছে, যে মহিলার হার ছিনতাই হয়েছিল, তিনি সঙ্গে সঙ্গে ১০০ ডায়াল করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। ওই এলাকায় সতর্ক করা হয় টহলরত পুলিশদের। এর মাঝে নিজের বাইক নিয়ে দুষ্কৃতীদের মোটরবাইককে তাড়া করেন ওই যুবক। কিছু দূর গিয়ে বাইক ফেলে দুষ্কৃতীরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। যুবকও দৌড়ে তাদের পিছু ধাওয়া করেন। এই দৃশ্য পুলিশের নজরে আসে এবং ধরা পড়ে যায় দুই দুষ্কৃতী। পরে জানা যায়, সে দিন সকালে কাশীপুরেও এই দুই দুষ্কৃতীই অন্য এক মহিলার হার ছিনতাই করেছিল।

বৃহস্পতিবার কাঁকুড়গাছির ওই যুবক যদি ছিনতাইবাজদের তাড়া না করতেন, তা হলে এত তাড়াতাড়ি তারা ধরা পড়ত কি না, তা নিয়ে

প্রশ্ন উঠেছে। কারণ শুক্রবার এন্টালির ছিনতাইবাজের সন্ধান রবিবার রাত পর্যন্ত পায়নি পুলিশ। ডিসি (ইএসডি) দেবস্মিতা দাস রবিবার বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন