সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধা মাকে স্টেশনে রেখে এলেন দুই ভাই!

এই দুই ভাইয়ের নামও রাম–লক্ষ্মণ। তবে পিতৃসত্য পালনের জন্য বনবাসে যাওয়া নয়, সম্পত্তির লোভে দুই ভাই বৃদ্ধা মাকে রাতের অন্ধকারে বারাসত স্টেশনে ফেলে এসেছিলেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০০
Share:

হাসপাতালে সবলা সরকার।

এই দুই ভাইয়ের নামও রাম–লক্ষ্মণ। তবে পিতৃসত্য পালনের জন্য বনবাসে যাওয়া নয়, সম্পত্তির লোভে দুই ভাই বৃদ্ধা মাকে রাতের অন্ধকারে বারাসত স্টেশনে ফেলে এসেছিলেন বলে অভিযোগ। অনাহার-অযত্নে মুখ ও গোটা শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে মরতে বসেছিলেন বৃদ্ধা। সোমবার এক মহিলা ও প্ল্যাটফর্মের কিছু দোকানির চেষ্টায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত হাসপাতালে। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে বলে জানান হাসপাতাল সুপার।

Advertisement

আশির কাছাকাছি বয়স। বৃদ্ধার নাম সবলা সরকার। তিনি জানিয়েছেন, বারাসতের নেতাজিনগরে তাঁর বাড়ি। বাড়িঘর সব তাঁরই নামে। রাম ও লক্ষ্মণ তাঁর দুই ছেলে। এক জন ভ্যানরিকশা চালান, অন্য জন কলের মিস্ত্রি। বৃদ্ধার অভিযোগ, মাস দুয়েক আগে দুই ছেলে তাঁকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে বাড়ি থেকে নিয়ে বেরোন। তার পরে রাতে বারাসত স্টেশনে তাঁকে বসিয়ে বেপাত্তা হয়ে যান। প্রথমে প্ল্যাটফর্মে, পরে ওভারব্রিজে আশ্রয় নেন বৃদ্ধা। অনাহারে, অযত্নে তাঁর শরীরে সংক্রমণ শুরু হয়। প্রচণ্ড গরমে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েন। কেউ কেউ পয়সাও ছুড়ে দিতেন। কিন্তু তা কুড়োনোর ক্ষমতা ছিল না। চুরি হয়ে যেত সেই পয়সাও।

বারাসতের চাঁপাডালির বাসিন্দা প্রিয়া দাসও যাতায়াতের পথে বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে পয়সা দিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার দেখতে পান, বৃদ্ধা একেবারে নেতিয়ে পড়েছেন। প্রিয়ার কথায়, ‘‘দেখি, ওঁর শরীর খুবই খারাপ। কেন এ ভাবে পড়ে রয়েছ জিজ্ঞাসা করতেই দেখি, চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।’’

Advertisement

ওই বৃদ্ধার কাছ থেকে তাঁর দুর্দশার কথা জানতে পারেন প্রিয়াদেবী। তার পরে তাঁর চেনা একটি এনজিও এবং জিআরপি-র কাছে ওই বৃদ্ধার বিষয়ে জানান প্রিয়াদেবী। এগিয়ে আসেন রতন নন্দীর মতো প্ল্যাটফর্মের চা-দোকানিরাও। রতনবাবু বলেন, ‘‘ওই দিদি, আমি, পুলিশ মিলে ওই বৃদ্ধাকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাই। সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসা শুরু হয়। বিকেলের পর থেকে আস্তে আস্তে একটু কথা বলতে পারছেন তিনি।’’

সবলাদেবীর ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি রেল পুলিশ। তবে পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধা একটু সুস্থ হলেই তাঁর সঙ্গে কথা বলে ছেলেদের খোঁজ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন