থানার বদলে তদন্তে এ বার গোয়েন্দারা

রানিকুঠির জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশন-এ চার বছরের ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তভার নিল গোয়েন্দা বিভাগের স্পেশ্যাল জুভেনাইল পুলিশ ইউনিট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:২৩
Share:

ঘেরাও: পুলিশকে ঘিরে অভিভাবকদের বিক্ষোভ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর মোড়ে রাস্তা আটকে হাজারখানেক ক্ষুব্ধ অভিভাবকের অবস্থান তখন ১০ মিনিট পেরিয়েছে। রবিবার বেলা পৌনে ১২টা। ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন কলকাতা পুলিশের যাদবপুর ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার রূপেশ কুমার। নির্যাতিতার বাবা ও বিক্ষোভে সামিল অন্য অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে ডিসি জানিয়ে দিলেন, মামলার তদন্তভার যাদবপুর থানা থেকে যাচ্ছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে।

Advertisement

রানিকুঠির জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশন-এ চার বছরের ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তভার নিল গোয়েন্দা বিভাগের স্পেশ্যাল জুভেনাইল পুলিশ ইউনিট। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই সেলের অ্যাসিস্যান্ট কমিশনার মৌসুমী পালের নেতৃত্বে একটি দল এ বার তদন্ত করবে। এর তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকবেন ডিসি (ডিডি ২) নিলু শেরপা চক্রবর্তী।

লালবাজার সূত্রের খবর, পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ওই ঘটনার তদন্ত গোয়েন্দা বিভাগের হাতে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

প্রথমত, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারও উদ্বিগ্ন। শিক্ষামন্ত্রী নিজে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, এই ধরনের অপরাধের তদন্তে গোয়েন্দা বিভাগের স্পেশ্যাল জুভেনাইল পুলিশ ইউনিটের বিশেষ ব্যুৎপত্তি আছে বলে গণ্য করা হয়। থানার মতো পাঁচ কাজে তাদের মাথা ঘামাতে হয় না। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগোতে তাদের সুবিধা হবে।

তিন, মামলা রুজু হয়েছে যেখানে, সেই যাদবপুর থানার পুলিশ ঠিক মতো তদন্তেই এগোতে পারছে না। উল্টে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই তাদের টানা তিন দিন ব্যতিব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। রবিবারও অভিভাবকদের সভা, মিছিল ও পথ অবরোধের জেরে সকাল থেকে সন্ধ্যা যাদবপুর থানার ওসি এবং অতিরিক্ত ওসি ছিলেন রাস্তায়। সঙ্গে অন্য কয়েক জন অফিসার।

চার, ‘পকসো’ বা যৌন পীড়নের হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করার আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে ধৃত দুই শিক্ষক অভিষেক রায় ও মহম্মদ মফিজুদ্দিনের বিরুদ্ধে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার হওয়া ইস্তক তাঁরা দু’জন টানা অভিযোগ অস্বীকার করছেন। এই অবস্থায় তদন্তে সূত্র খুঁজে বার করতে গোয়েন্দা বিভাগকে নামানোই ভাল বলে মনে করছে লালবাজার।

শনিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (৫) তথা গোয়েন্দা প্রধান বিশাল গর্গের নেতৃত্বে চার আইপিএস অফিসার যাদবপুর থানায় যান। তার পরেই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়, তদন্ত যাবে গোয়েন্দা বিভাগের হাতে। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরেই যাদবপুর থানা পকসো আইনের ৪ এবং ৬ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছিল। ওই দুই ধারায় গোপনাঙ্গে মারাত্মক অত্যাচারের দায়ে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। আইপিএস অফিসারেরা বিষয়টি জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন