বিষাক্ত মাদকের ইঞ্জেকশনে নার্সের মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে রহস্য

ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্সের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৭
Share:

সানিশামল পি এস

ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্সের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, অজানা বিষাক্ত মাদকের ইঞ্জেকশনের প্রভাবেই মৃত্যু হয়েছে কেরলের বাসিন্দা, পেশায় নার্স সানিশামল পি এসের (২৩)। শুক্রবার রাতে নারায়ণপুর থানা এলাকার নার্সিং হস্টেল থেকে সানিশামলকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বাগুইআটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

সানিশামল কি নিজেই নিজের দেহে ইঞ্জেকশনটি দিয়েছিলেন, না কি অন্য কেউ তাঁকে খুন করেছে, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে নারায়ণপুর থানার পুলিশ। নারায়ণপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকেরা মৃতার মোবাইল উদ্ধার করে কললিস্ট খতিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি, হস্টেলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই হস্টেলের বেশ কয়েক জন নার্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বেশ কিছু দিন ধরে সানিশামল মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ই এম বাইপাসের ওই বেসরকারি হাসপাতালে নার্সিং প্রশিক্ষণ শেষ করার পরেই ওই হাসপাতালেই কাজে যোগ দেন সানিশামল। কিন্তু সম্প্রতি ওই হাসপাতালে চাকরি ছেড়ে অন্য কোথাও কাজ খুঁজছিলেন তিনি। কিন্তু মনের মতো চাকরি না পাওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই নার্স।

আরও পড়ুন: ‘তা হলে কি নভেম্বর থেকে পুলে জল ছিল’

Advertisement

দক্ষিণ নারায়ণপুরের দোতলায় যে হস্টেলে সানিশামল থাকতেন, সেই ঘরে পাঁচ জন মহিলা থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন দিন কয়েক আগে বাড়ি গিয়েছিলেন। ওই হস্টেলের ওয়ার্ডেন অঞ্জনা মুখোপাধ্যায় রবিবার বলেন, ‘‘সানিশামল অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দু’দিন ছুটি নিয়েছিলেন। শুক্রবার বিকেল চারটে নাগাদ ওই ঘরের তিন মহিলা বাজারে কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিলেন। সানিশামল ওঁদের সঙ্গে যাননি। দুপুরের খাবারও খাননি।’’ অঞ্জনাদেবী আরও বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় তিন জন হস্টেলে ফিরে দেখেন, সানিশামল মুখে কম্বল ঢাকা দিয়ে শুয়ে রয়েছেন। তিন জনের মধ্যে এক জন কম্বল খুলে ওঁকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায় আমাকে খবর দেন। আমি খবর পাওয়ামাত্রই অ্যাম্বুল্যান্সে করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই চিকিৎসকেরা ওঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’’ মৃতার এক আত্মীয় রবিবার কলকাতায় এসে পৌঁছন। মৃতার কাকা বিজু বলেন, ‘‘কী কারণে মৃত্যু হয়েছে, কিছুই জানি না। পুলিশ তদন্ত করছে।’’ পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। হস্টেলের নার্স, ছাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ এই ঘটনায় রবিবার রাত পর্যন্ত মৃতার পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন