—প্রতীকী ছবি
শাসক থেকে বিরোধী, সব পক্ষই চাইছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাওড়ায় পুর নির্বাচন হোক। ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস (ডিলিমিটেশন) না করে বর্তমানের ৬৬টি ওয়ার্ড সম্পূর্ণ অবিকৃত রেখে নির্বাচন করার ব্যাপারে তৃণমূল পুরবোর্ডের প্রস্তাব মানতে সিপিএম ছাড়া আর কোনও দলেরই আপত্তি নেই। এমনকি, বিজেপির পক্ষ থেকেও এই প্রস্তাবকে সমর্থন করা হয়েছে। কিন্তু জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস না করে ভোট করার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছেন।
তাঁর বক্তব্য, হাওড়ায় ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস জরুরি। শনিবার নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তের জন্য হাওড়া পুরসভায় সাধারণ সভা ডাকা হয়। পুর-চেয়ারম্যান অরবিন্দ গুহ ৬৬টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নোটিস দিয়ে জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে ওই সময়সীমার মধ্যে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস না করে ৬৬ ওয়ার্ডের স্থিতাবস্থা বজায় রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে। এ ব্যাপারে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য এ দিন সব মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলেরা উপস্থিত হন। সেই সভাতেই প্রস্তাবটি দেন মেয়র রথীন চক্রবর্তী। তা সঙ্গে সঙ্গেই ধ্বনি ভোটে গৃহীত হয়।হাওড়া পুরসভায় ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬২টিই তৃণমূলের দখলে।
দু’টি করে আসন সিপিএম ও বিজেপির দখলে। এ দিনের এই সাধারণ সভায় কোনও বক্তব্য রাখতে না দেওয়া নিয়ে বিজেপি ও সিপিএমের কাউন্সিলরেরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও দু’পক্ষই ভোট নির্ধারিত সময়ে হওয়ার ব্যাপারে কোনও আপত্তি তোলেননি।
তবে সিপিএমের দুই কাউন্সিলর আজহার আলি মিদ্যে ও আসরফ জাভেদ জানান, হাওড়া পুরসভায় ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন আছে। না হলে উন্নয়ন সমান ভাবে হবে না। বিজেপির কাউন্সিলরেরা অবশ্য শাসক দলের সিদ্ধান্তে একমত। মেয়র বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের ব্যাপারে পুরসভার মতামত জানতে চেয়েছিল। তাই সাধারণ বৈঠকে সকলের মতামত নিয়ে রাজ্যকে জানাচ্ছি।’’
তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে যে তৃণমূল জেলা সভাপতি একমত নন, তা তাঁর কথাতেই পরিষ্কার। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়ায় ওয়ার্ডগুলির যা পরিস্থিতি, তাতে পুনর্বিন্যাস হওয়া প্রয়োজন। কারণ কোনও ওয়ার্ডে ৫০ হাজার বাসিন্দা তো কোনও ওয়ার্ডে ৫ হাজার। অথচ দু’টি ওয়ার্ডেই বরাদ্দ হচ্ছে সমপরিমাণ টাকা।’’ নির্ধারিত সময়ে ভোট নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরদের দাবি সম্পর্কে অরূপবাবু সরাসরি মন্তব্য না করতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি রাজ্য সরকার ঠিক করবে।’’ এই বিষয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পুর নির্বাচনের বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের বিষয়। তাই তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’