গাড়ির গতি বাড়াতে শহরের রাস্তায় তৈরি হয়েছে একের পর এক উড়ালপুল। অথচ লজ্ঝড়ে এবং ভাঙাচোরা বাসের কারণে কখনও কখনও থমকে যাচ্ছে সেই গতি। মাঝপথে সেই সব বাস খারাপ হয়ে যানজট তৈরি তো করছেই, পাশাপাশি তাতে স্বাচ্ছন্দ্যও প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। অন্তত যাত্রীদের একাংশের তেমনই অভিযোগ। এ বার তাই রক্ষণাবেক্ষণহীন এবং লজ্ঝড়ে বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করল লালবাজার। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, রাস্তায় নিরাপদে চলার মতো অবস্থাতেই নেই এমন পাঁচটি বাসকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আটক করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ওই বাসের মালিকদের ডেকে সতর্কও করেছে পুলিশ।
যাত্রী এবং পুলিশের একাংশের দাবি, উড়ালপুল-শপিং মল-আকাশছোঁয়া ফ্ল্যাটে শহর আধুনিক হচ্ছে। তার সঙ্গে রাস্তায় চলা ক্ষয়ে যাওয়া বাস একেবারেই মানানসই নয়। আক্ষরিক অর্থেই হাড়গোড় বেরিয়ে পড়া এই ধরনের বাসের তালিকা তৈরির জন্য সপ্তাহ তিনেক আগে লালবাজারের তরফে প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো প্রতিটি গার্ডের পক্ষ থেকে রাস্তায় চলা বাসের ছবি এবং নম্বর-সহ একটি তালিকা লালবাজারে পাঠানো হয়। প্রতিটি কোণ থেকে ওই লজ্ঝড়ে গাড়ির ছবি তোলা হয়েছিল। পাশাপাশি
বাসের বিভিন্ন অংশ যেমন রিয়ার ভিউ মিরর, চাকা, ব্রেক ইত্যাদির ছবিও পাঠানো হয়।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে বাসের বাইরের কাঠামো, চাকার অবস্থা, যাত্রীদের বসার জায়গা-সহ কয়েকটি জিনিস খতিয়ে দেখা হয়। এর পরে দেখা হয় যন্ত্রাংশের অবস্থা। তার পরেই লজ্ঝড়ে বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয় লালবাজার।
দৃশ্যদূষণ করে চলা এই সব বাসের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ? পুলিশ জানাচ্ছে, শহরের রাস্তায় চলা বহু বাসের ইন্ডিকেটর নেই। কোনও বাসের রিয়ার ভিউ মিরর আবার সেলোটেপ দিয়ে আটকানো। কোথাও চাকা ক্ষয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া, বাসের কাঠামো তোবড়ানো তো আছেই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই ধরনের বাস মাঝরাস্তায় খারাপ হয়ে যানজট দেখা দিচ্ছে। এক পুলিশকর্তা বলছেন, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিশেষত ব্রেক এবং চাকা ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। তাই যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি পথ-নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।