খেলার জলে। শুক্রবার দীপঙ্কর মজুমদারের তোলা ছবি।
পরিস্থিতি তৈরি ছিলই। শুক্রবার সকাল থেকেই বর্ষার মেজাজ জাঁকিয়ে বসেছিল কলকাতায়। আর দুপুরের পরে মহানগরে যেন ভরপুর ‘রেনি ডে’! সৌজন্য ঝাড়খণ্ডের ঘূর্ণাবর্ত এবং দক্ষিণবঙ্গের উপরে থাকা মৌসুমি অক্ষরেখার যুগলবন্দি। আলিপুর হাওয়া অফিসের খবর, আজ, শনিবারও শহরের কপালে বৃষ্টি-সুখ রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কলকাতায় ২০.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির জন্য দিনের তাপমাত্রাও বাড়তে পারেনি। কলকাতায় এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কম। ফলে দিনভর আবহাওয়া ছিল স্বস্তিদায়ক।
বর্ষা স্বস্তি দিলেও এ দিন অবশ্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে মহানগরের যানজট। পুলিশ সূত্রের দাবি, ঘণ্টা দুয়েকের বৃষ্টিতেই বেশ কিছু রাস্তায় জল জমে যায়। ঢিমে হয়ে যায় যানবাহনের গতিও। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, আশুতোষ মুখার্জি রোড, বিধান সরণি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গাঁধী রোড, বি টি রোডের একাংশে যানজট বেশি হয়েছে। যানজটে নাজেহাল হতে হয়েছে পার্ক সার্কাস কানেক্টর, তপসিয়া এলাকাতেও। ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে ধর্মতলা যাচ্ছিলেন অনিলাভ দে। পার্ক সার্কাস কানেক্টরে যেতেই থমকে যায় ট্যাক্সি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত গড়ালেও বহু এলাকার যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
কলকাতা পুরসভার অবশ্য দাবি, নিকাশি ব্যবস্থায় উন্নতির জন্য এ দিন তিলজলার কালীপুর ছাড়া আর কোথাও তেমন জল জমেনি। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ঠনঠনিয়া এলাকায় আগে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও জল জমে যেত। কিন্তু এ বার ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিতেও জল জমেনি। এ দিন শহরের ১৫টি পাম্পিং স্টেশন কাজ করেছে বলে জানান তারকবাবু। পুরসভা সূত্রের খবর, দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত তপসিয়ায় ৫৬ মিলিমিটার, বেলগাছিয়ায় ৯২, বীরপাড়ায় ৫০.৫, বালিগঞ্জে ২৯ মিলিমিটার, ঠনঠনিয়ায় ৫০.৪, উল্টোডাঙায় ৭২, যোধপুর পার্কে ২৭ এবং মানিকতলায় ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানী গণেশকুমার দাস জানান, ঘূর্ণাবর্তটি বড় এলাকা জুড়ে রয়েছে। তার উপরে মৌসুমি অক্ষরেখাটি খাস কলকাতার উপরেই। ফলে বৃষ্টির সম্ভাবনা শনিবার তো রয়েইছে। রবিবারেও বৃষ্টির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ‘‘সপ্তাহের শেষটা স্বস্তিতেই কাটাতে পারবেন শহরবাসী,’’ বলছেন তিনি।