কলকাতা, সল্টলেক এবং শিলিগুড়িতে পাঁচতলার (জি প্লাস ফোর বা ১৪.৫ মিটার উঁচু) বেশি সমস্ত বহুতলে অগ্নি-প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও কঠোর করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সরকারি এবং বেসরকারি, সব বহুতলেই এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে শীঘ্রই বহুতলের মালিকদের নোটিস পাঠাবে দমকল দফতর।
দমকল দফতরের তরফে বহুতলের মালিকদের জানানো হয়েছে, নোটিস পেয়ে জরুরি ভিত্তিতে এই সুপারিশগুলি কার্যকর করতে হবে। দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, ‘‘শুধু শহরেই নয়, জেলাতেও যে সব বহুতল তৈরি হচ্ছে, তাদেরও নোটিস পাঠানো হচ্ছে। মূল উদ্দেশ্য অগ্নি-প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও উন্নত করা। তাতে বহুতলের মালিকেরা সচেতন হবেন। সুপারিশ না মানলে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।’’
কী বলা থাকছে দমকলের নোটিসে? এক কর্তা জানান, পাঁচতলার বেশি সব বহুতলে ঢোকা ও বেরোনোর জন্য দু’টি সিঁড়ি থাকতে হবে। দমকলের গাড়ি যাতে সহজে ঢুকতে পারে, সে জন্য বহুতলের চারদিকে সাড়ে চার মিটার চওড়া রাস্তা করতে হবে। রাখতে হবে কমপক্ষে ১ লক্ষ লিটারের জলাধার। করতে হবে ইন্টারনাল হাইড্র্যান্ট এবং প্রতিটি তলে তার আউটলেট। এ ছাড়া বসাতে হবে স্মোক ডিটেক্টর এবং অ্যালার্ম।
দমকলের ওই কর্তা আরও জানান, কলকাতায় দিন দিন বহুতলের সংখ্যা বাড়ছে। পাঁচতলার বেশি বাড়ি তৈরি করতে গেলে জাতীয় বিল্ডিং রুল মেনে চলতে হয়। সে ক্ষেত্রে দমকলের নিয়ম মেনেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তা ছাড়া, কলকাতায় দমকলের গাড়ি এবং কর্মীর সংখ্যা বেশি। কিন্তু শিলিগুড়ি বা বিধাননগরে ইদানীং প্রচুর বহুতল তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় গাড়ি এবং কর্মী অপ্রতুল। পাশাপাশি, জেলাগুলির বহুতলেও অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক মতো আছে কি না, তা দেখা দরকার।
ওই কর্তার বক্তব্য, বহু ক্ষেত্রেই আগুন নেভাতে গিয়ে দেখা যায়, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক মতো কাজ করছে না। ফলে আগুন লাগার পরেও অ্যালার্ম বাজেনি। কোথাও আবার পর্যাপ্ত জল না থাকায় সমস্যা হয়। তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে বহুতলের মালিকদের এই নোটিস পাঠানো হচ্ছে।
কিন্তু বহুতলের মালিকেরা সুপারিশ না মানলে কী করবে দমকল? ওই কর্তা জানান, দমকলের একটি অডিট কমিটি রয়েছে। তার দায়িত্বে রয়েছেন ডিভিশনাল অফিসারেরা। সুপারিশগুলি কার্যকর করতে বহুতলের মালিকেরা ব্যবস্থা নিয়েছেন কি না, ওই কমিটি তা দেখবে। মন্ত্রী জাভেদ খানের কথায়, ‘‘নোটিস দেওয়ার পরে দমকলের হাতে শহরের বহুতলগুলির হাল-হকিকত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আসবে। সুপারিশ না মানলে পুলিশের কাছে দমকলের পক্ষে বহুতলের মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হবে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’