Covid Waste

কোভিড-বর্জ্য নিয়ে রাজ্যকে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দিতে নির্দেশ

এর আগেও কোভিড-বর্জ্য নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিল রাজ্য। কারণ, গত জুন পর্যন্ত সংগৃহীত কোভিড-বর্জ্যের যে পরিমাণ রাজ্যের তরফে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছিল, তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন পরিবেশকর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ০১:১০
Share:

-ফাইল চিত্র।

কলকাতা-সহ রাজ্যের কোভিড-বর্জ্য সংক্রান্ত একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে। সেই কমিটি কোভিড-বর্জ্য সংক্রান্ত সমস্যা এবং তার সমাধানের সুপারিশ করেছে। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত পর্ষদকে ওই রিপোর্ট তাদের কাছে জমা দিতে বলেছে। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, ওই রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ও তিন সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।

Advertisement

এর আগেও কোভিড-বর্জ্য নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিল রাজ্য। কারণ, গত জুন পর্যন্ত সংগৃহীত কোভিড-বর্জ্যের যে পরিমাণ রাজ্যের তরফে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছিল, তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন পরিবেশকর্মীরা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, সংশ্লিষ্ট হলফনামায় জানানো হয়েছিল, ‘কমন বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট ফেসিলিটিজ়’ (সিবিডব্লিউটিএফ)-এর মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সংগৃহীত কোভিড-বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার ৭১৫ কিলোগ্রাম। বিভিন্ন পুর এলাকা থেকে সংগৃহীত বর্জ্যের পরিমাণ ৮৩২ কিলোগ্রাম। আর হোম কোয়রান্টিনে থাকা রোগীদের থেকে সংগৃহীত বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ৮৩২ কিলোগ্রাম।

মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানান, এটা কাউকে দোষারোপ করা নয়। কিন্তু কোভিড-বর্জ্যের মতো গুরুতর বিষয়ের ক্ষেত্রে কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা রাজ্য সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এই বর্জ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ এবং তা নষ্ট করা—সবই সাধারণ বর্জ্যের তুলনায় আলাদা। সুভাষবাবুর কথায়, ‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এ নিয়ে কমিটি গড়েছে। সরকারি প্রতিনিধিদের পাশাপাশি তাতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও আছেন। কোভিড-বর্জ্যের সমস্যা বুঝে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে কমিটি। সেই সংক্রান্ত প্রতিবেদন সোমবারের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে। কিন্তু কমিটির সুপারিশগুলি ঠিক মতো মানা হল কি না, তা দেখা প্রয়োজন।’’

Advertisement

এই মুহূর্তে যে ছ’টি সিবিডব্লিউটিএফ রাজ্যে কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহ করছে, তাদের এলাাকাভিত্তিক ভাগ রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, বর্ধমান, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং উত্তরবঙ্গ থেকে সংস্থাগুলি কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু গত জুনে যে পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের কথা সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, তা কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা। যেমন, হাওড়া পুর এলাকায় ১৩-২২ জুনের মধ্যে ১৪ কেজি কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহের কথা জানানো হয়েছিল। একই ভাবে ওই সময়ের মধ্যে দুর্গাপুর পুর এলাকায় বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ৮০ কেজি।

শিলিগুড়ি পুর এলাকায় ৫০০ কিলোগ্রাম কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ করেছিল সংশ্লিষ্ট সিবিডব্লিউটিএফ। আসানসোল পুরসভার ক্ষেত্রে তার পরিমাণ ছিল ২৪ কিলোগ্রাম। অন্য দিকে, চন্দননগর ও বিধাননগর ‌পুরসভায় তখনও সেই কাজ শুরু হয়নি। কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে ওই সময়সীমার মধ্যে ২১৪ কিলোগ্রাম কোভিড-বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ হয়েছিল বলে সরকারি নথি জানাচ্ছে। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘এই পরিসংখ্যান জুন মাসের। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি আমাদের জানা প্রয়োজন। কারণ, কোভিড-বর্জ্যের বিপদ সবাইকে বুঝতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন