জমি ব্যবহারের কর না দেওয়ার জন্য শহরের বেশ কয়েকটি উড়ালপুল ও সেতু থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থার হোর্ডিং সরানোর অভিযোগ উঠেছিল কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি বিজ্ঞাপন সংস্থা হাইকোর্টে মামলাও করে। বুধবার তার শুনানিতে বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তী বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং সরানোর উপরে স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।
বিজ্ঞাপন সংস্থা সূত্রের খবর, এইআরবিসি (হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স) কর্তৃপক্ষ ২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ সালে দু’দফায় তাঁদের রক্ষণাবেক্ষণে থাকা বিভিন্ন উড়ালপুল ও সেতুতে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং দেওয়ার জন্য টেন্ডার ডাকেন। গড়িয়াহাট, পার্ক স্ট্রিট, এজেসি বসু, লকগেট, খিদিরপুর উড়ালপুলে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং দেওয়ার বরাত পায় ছ’টি সংস্থা।
একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার আইনজীবী দীপাঞ্জন সিংহরায় জানান, এইআরবিসি-কে লাইসেন্স ফি দিয়ে ওই সংস্থাগুলি হোর্ডিং লাগিয়েছিল। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি কলকাতা পুর-কর্তৃপক্ষ নির্দেশ জারি করে জানান, ওই সব হোর্ডিং লাগানোর জন্য বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলিকে ‘ল্যান্ড ইউজার চার্জ’ দিতে হবে পুরসভাকে। সেই করের পরিমাণ ২৫ কোটি টাকার বেশি বলে আইনজীবী জানান। সেই কর আদায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে।
এ দিন বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির পক্ষে আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, যে জমিতে হোর্ডিং লাগানো হয়েছে, সেটি এইচআইবিসি-র, কলকাতা পুরসভার নয়। কলকাতা পুর-আইনে এই ধরনের হোর্ডিং লাগানোর জন্য যত টাকা কর দেওয়ার নিয়ম আছে, তা বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি দিতে রাজি। কিন্তু ‘ল্যান্ড ইউজার চার্জ’ পুর-কর্তৃপক্ষ নিতে পারেন না। আইনে পুরসভার সেই ক্ষমতা নেই।
পুরসভার আইনজীবী অলোক ঘোষ আদালতে দাবি করেন, পুর-আইনে যে পরিমাণ কর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেই পরিমাণ করও বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি মেটায়নি। তা ছাড়া ‘ল্যান্ড ইউজার চার্জ’ নেওয়ার ক্ষমতা পুরসভার রয়েছে। তিনি পরের শুনানিতে তার প্রমাণ দেবেন।
দু’পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি ছ’টি বিজ্ঞাপন সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘ল্যান্ড ইউজার চার্জ’ ছাড়া অন্য যে কর পুরসভার প্রাপ্য, তা ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেটাতে হবে। ‘ল্যান্ড ইউজার চার্জ’ আদায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি থাকবে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত।