বিবেকানন্দ রোড

পাঁচ বছর পার, এখনও অর্ধসমাপ্ত উড়ালপুল

বিবেকানন্দ রোডের উপরে উড়ালপুলের কাজ কবে শেষ হবে, এখনও সে বিষয়ে সদুত্তর মিলল না। প্রায় ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ অসম্পূর্ণই রয়ে গিয়েছে। বাম আমলে এই উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। উড়ালপুল তৈরির ভার দেওয়া হয় কেএমডিএ-কে। নির্মাণ শুরু হয় ২০০৯ সালে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে। সিদ্ধান্ত হয়, ২০১৩-এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৩
Share:

উড়ালপুল এখন যে অবস্থায়। নিজস্ব চিত্র

বিবেকানন্দ রোডের উপরে উড়ালপুলের কাজ কবে শেষ হবে, এখনও সে বিষয়ে সদুত্তর মিলল না। প্রায় ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ অসম্পূর্ণই রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

বাম আমলে এই উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। উড়ালপুল তৈরির ভার দেওয়া হয় কেএমডিএ-কে। নির্মাণ শুরু হয় ২০০৯ সালে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে। সিদ্ধান্ত হয়, ২০১৩-এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

কেএমডিএ সূত্রে খবর, বিবেকানন্দ রোড, গিরিশ পার্ক ও পোস্তায় যানজট কমাতে উল্টোডাঙা মোড় থেকে হাওড়া সেতুর মুখ পর্যন্ত ৪.৬ কিমি উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা হয়। স্থির হয় উড়ালপুলের একটি অংশ যাবে গিরিশ পার্ক থেকে হাওড়া সেতুর মুখ পর্যন্ত। অন্য অংশটি আসবে উল্টোডাঙা মোড় থেকে। গিরিশ পার্ক থেকে হাওড়া পর্যন্ত ২.২ কিমি রাস্তার জন্য বরাদ্দ হয় ১৬৪ কোটি টাকা। স্থির হয়, গিরিশ পার্কে উড়ালপুলে ওঠানামার জন্য দু’টি অ্যাপ্রোচ রোড থাকবে। অন্য একটি ২ লেনের রাস্তা উড়ালপুল থেকে বেরিয়ে নিমতলা স্ট্রিটের দিকে যাবে। পরে, উল্টোডাঙার সঙ্গে গিরিশ পার্কের অংশটি যুক্ত হবে। সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি।

Advertisement

কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়তোষ ভট্টাচার্য বলেন, “কিছু প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত জটিলতা ছিল। সমস্যার কথা জেনেই ওই ঠিকাদারি সংস্থা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাঁরা তা করতে না পারায় কারণ জানাতে বলা হয়েছে।”

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থার কর্তৃপক্ষ বলেন, “কাজ শেষ করার জন্য যে সময় দরকার, তা পাচ্ছি না। দেরি হওয়ায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে।” প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত কিছু জমি আবার কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের। সেখানেও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

প্রশ্ন উঠেছে, বড়বাজারের মতো জায়গায় কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে জেনেও কেন এই সংস্থা বরাত নিলেন? এক কর্তা জানান, সময়সাপেক্ষ হবে জেনেই দায়িত্ব নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এমন জট যে হবে ধারণা করা যায়নি।

ঠিকাদার সংস্থার এক আধিকারিক জানান, বড়বাজারে পার্কিংয়ের সমস্যা থাকায় ভাল ভাবে কাজ এগোচ্ছে না। এ ছাড়া ওই এলাকার পুর-পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যা হলে সেগুলি মেরামতের জন্যও কাজ বন্ধ রাখতে হয়। কোথাও আবার কাজ করতে বিভিন্ন সরকারি দফতরের অনুমতিও প্রয়োজন। যে কাজের জন্য দিনে অন্তত ১৫ ঘণ্টা প্রয়োজন সেখানে মাত্র ছ’ঘন্টার মতো সময় পাওয়া যায়।

কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, হাওড়া সেতুর মুখের জমি কলকাতা বন্দরের। ওখানে বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি অফিসও আছে। ওখান দিয়ে উড়ালপুল গেলে বন্দরের অসুবিধা হবে ভেবে প্রথমে বন্দর কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেননি। একই ভাবে, বড়বাজারের পুরনো টাঁকশাল হেরিটেজ ভবন হওয়ায় এর সামনে যাতে নির্মাণগত বাধা না আসে তাই আপত্তি তোলে কেন্দ্রীয় সরকার। পরে অবশ্য সেই সমস্যা মেটে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, উড়ালপুল নির্মাণে তাঁদের আপত্তি নেই। তবে হাওড়া সেতু মেরামতির জন্য অনেক সময়ে ভারী যন্ত্র নিয়ে যেতে হয়। এ জন্য রাস্তার দরকার। বিকল্প রাস্তা তৈরির ব্যাপারে কেএমডিএ-কে জানানো হয়েছে। প্রিয়তোষবাবু বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষের অসুবিধার কথা ভেবে বিকল্প রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন