মশা পুষলেই গচ্চা এক লাখ

পুর কর্তৃপক্ষ বারবার নানা ভাবে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। ঘরের ভিতরে কিংবা বাড়ির অন্য কোথাও জল না জমাতে আবেদন করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩০
Share:

সল্টলেকের এক আবাসন চত্বরে জমা জল। —ফাইল চিত্র।

সোজা আঙুলে কাজ হয়নি। তাই এ বার আঙুল বেঁকাচ্ছে কলকাতা পুরসভা।

Advertisement

পুর কর্তৃপক্ষ বারবার নানা ভাবে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। ঘরের ভিতরে কিংবা বাড়ির অন্য কোথাও জল না জমাতে আবেদন করেছেন। কারণ, ওই জমা জলেই ডিম পাড়ে মশারা। আর সেই মশাই শহরে ছড়িয়ে বেড়ায় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া। অনেক ক্ষেত্রেই পুরসভা অভিযানে গিয়ে দেখেছে, মানুষের কোনও হেলদোলই নেই। চৌবাচ্চা, ফুলের টব, ফুলদানি, পরিত্যক্ত পাত্র, বালতিতে দিনের পর দিন ধরে জমে আছে জল। আর সেই জলে থিকথিক করছে মশার লার্ভা।

শুধু বসত বাড়িই নয়, নির্মীয়মাণ বাড়ি, অসমাপ্ত সেতু, পরিত্যক্ত বাড়ির আনাচ-কানাচ, এমনকী বহু দিন ধরে পড়ে থাকা মণ্ডপের বাঁশের খাঁজেও জমা জলে মশার লার্ভা পেয়েছে পুরসভা। পুরকর্তারা জানিয়েছেন, বহু আবেদন-নিবেদন ও হুঁশিয়ারিতেও কাজ হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে পুরকর্মীদের বাড়ির চৌকাঠও মাড়াতে দেন না অনেক নাগরিক। সেই সব নাগরিককে ‘সোজা রাস্তা’য় নিয়ে আসার জন্য এ বার কড়া দাওয়াইয়ের ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুরসভা। জল জমিয়ে মশার বংশবিস্তারে সাহায্য করলে এখন থেকে পুরসভা এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় করতে পারবে। মঙ্গলবার বিধানসভায় কলকাতা পুরসভার আইন সংশোধন সংক্রান্ত বিলটি পাশ হওয়ায় পুরকর্তাদের হাতে এল এই নতুন অস্ত্র।

Advertisement

এত দিন বাড়িতে জল জমিয়ে রাখলে কলকাতা পুর আইনের ৪৯৬ নম্বর ধারায় জরিমানা বা অন্য কোনও শাস্তির নিদান ছিল না। বড়জোর তিন বার নোটিস পাঠাতে পারত পুরসভা। মিউনিসিপ্যাল কোর্টে আবেদন করে কোথাও ৫০ টাকা, কোথাও বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় করতে পেরেছে পুরসভা। পুর আইনের সংশোধনীতে ৪৯৬ (এ) নম্বর ধারায় পুরসভাকে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়ের ক্ষমতা দেওয়া হল।

আরও পড়ুন: ১০০ দিনের কাজে দেশের সেরা বাংলাই

পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ দিন বিধানসভায় সংশোধনী বিলটি পেশ করে বলেন, ‘‘আমরা চাই না এক জনকেও জরিমানা দিতে হোক। কিন্তু বহু দিন চেষ্টা করেও অনেককে সচেতন করা যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে মোটা অঙ্কের জরিমানা করার পথে যেতে হল।’’ কলকাতা শহরে মশা নিধনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী কংগ্রেস এবং বাম দলের একাধিক বিধায়কও।

মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘এখন তিন বার নোটিস পাওয়ার পরেও কেউ জমা জল না সরালে আমরা মিউনিসিপ্যাল কোর্টের দ্বারস্থ হই। এখনও পর্যন্ত ওই কোর্ট সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে।’’ অতীনবাবুর মন্তব্য, ‘‘পুরসভাই ওই আইন সংশোধন করে জরিমানা আদায়ের সুপারিশ করেছিল। আইনটি কার্যকর হলে মশাবাহিত রোগ দমনে পুরসভার সুবিধা হবে। আইন না মানলে আমরা সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় করতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন