১৫ বছরের পুরনো গাড়ি ধরতে উদ্যোগ

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ক’দিনে এ ভাবেই বেশ কিছু পুরনো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এমন নজরদারি এ বার থেকে টানা চলবে বলেই দাবি করছে ওই সূত্রটি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০০৯ সাল থেকেই শহরে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল করা শুরু হয়েছিল।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share:

গিরিশ পার্ক মোড়ের কাছে ছোট পণ্যবাহী গাড়িটিকে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল পুলিশকর্মীদের। রাস্তার পাশে থামিয়ে গা়ড়ির কাগজ পরীক্ষা করতেই দেখা গেল, সেটি ১৫ বছরেরও পুরনো। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সেটি শহরের রাস্তায় চলতে পারে না। তাই গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে নিলেন কর্তব্যরত সার্জেন্ট। ওই গাড়ির ঠাঁই এখন ডাম্পিং গ্রাউন্ডে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ক’দিনে এ ভাবেই বেশ কিছু পুরনো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এমন নজরদারি এ বার থেকে টানা চলবে বলেই দাবি করছে ওই সূত্রটি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০০৯ সাল থেকেই শহরে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল করা শুরু হয়েছিল। পরিবেশবিদেরা বলছেন, শহরের বায়ুদূষণের পিছনে অন্যতম কারণ ডিজেল চালিত বাণিজ্যিক গাড়ি। গাড়ি যত পুরনো হয় ততই তার থেকে দূষণের পরিমাণ বাড়ে। সে কথা মাথায় রেখেই ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিলের কথা বলা হয়েছিল। গোড়ায় সেই নির্দেশিকা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হলেও পরবর্তী কালে তা যথাযথ ভাবে পালন করা হয়নি।

পুলিশ সূত্রেও বলা হচ্ছে, ভারত স্টেজ-৪ গাড়ি রাস্তায় নামার পর থেকে ওই ধড়পাকড় একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ২০১২ সালের পর থেকে আর কোনও পনেরো বছরের পুরনো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। পুলিশও কোনও নতুন নির্দেশিকা জারি করেনি।

Advertisement

তা হলে হঠাৎ এত তৎপরতা বাড়ল কেন?

পুলিশ ও পরিবেশ দফতর সূত্রের দাবি, এর পিছনে জাতীয় পরিবেশ আদালতের একটি নির্দেশের ভূমিকা রয়েছে। কলকাতার বায়ুদূষণ
নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা চলছে। সেই মামলায় ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল করার ব্যাপারে সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। কাল, সোমবার সেই মামলার শুনানি রয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, এই ধরপাকড় দেখিয়ে সেই রিপোর্টে পুলিশের সক্রিয়তা দেখানো হতে পারে। লালবাজার সূত্রে অবশ্য বলা হয়েছে, ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল করার প্রক্রিয়া কখনও বন্ধ হয়নি। এত দিন কোনও গাড়ি আইন ভাঙলে জরিমানার সময় কাগজপত্র পরীক্ষা করা হতো। সে সময় সংশ্লিষ্ট থানা গাড়ি বাতিল করত। এখন রাস্তায় দাঁড়ানো ট্র্যাফিক সার্জেন্টদেরই সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যদিও পুলিশেরই একটি সূত্র বলছে, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ১৫ বছরের পুরনো যে কোনও বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিল করার কথা। কিন্তু এখন শুধুমাত্র পণ্যবাহী গাড়ির উপরেই কড়াকড়ি চলছে। ট্যাক্সি বা বাসের উপরে সেই নজরদারি নেই। জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘শুধু পণ্যবাহী গাড়ি বাজেয়াপ্ত করলে হবে না। সব ধরনের বাণিজ্যিক গাড়িই বাতিল করতে হবে। তা না হলে নিয়ম পুরোপুরি পালন করা হবে না।’’ শহরের পরিবেশকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, পুরনো গাড়ি বাতিলের নির্দেশিকা ঠিক মতো পালন করলে বহু সরকারি গাড়ি রাস্তায় নামতে পারবে না। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বাস, ট্যাক্সি বাতিল করা শুরু হলে রাজনৈতিক ভাবে চাপ আসতে পারে। তাই প্রাথমিক ভাবে পণ্যবাহী গাড়িকেই নিশানা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন