দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজ।
হাতকাটা পোশাক পরে যাওয়ায় কলেজে হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুললেন বি কম অনার্সের এক ছাত্রী। শুক্রবার নারী দিবসেই দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজে ওই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যায় পুলিশ।
দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে বি কম অনার্সের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর অভিযোগ, তাঁর পোশাক নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করছেন কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, তিনি হাতকাটা কুর্তি পরে আসায় তাঁকে ছাত্র সংসদের সদস্যেরা অপমান করেন। এমনকি, তাঁকে ভয়ও দেখানো হয়। অভিযোগ, তাঁর পক্ষ নিয়ে কথা বলতে যাওয়ায় ছাত্র সংসদের সদস্যদের হাতে নিগৃহীত হন তাঁর বন্ধুরাও। যদিও কলেজের তৃণমূল পরিচালিত ইউনিয়ন এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাটি কলেজের প্রিন্সিপ্যালকে জানানো হয়েছে বলেও দাবি স্থানীয় পাটুলি থানার পুলিশের।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ‘‘প্রথম ক্লাস হয়ে যাওয়ার পরে কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েক জন সদস্য আমাকে ক্লাসের বাইরে ডাকেন। আমি বাইরে যেতেই ওঁরা আমার পোশাক নিয়ে নানা মন্তব্য করতে শুরু করেন। আমাকে বলা হয়, হাতকাটা পোশাক পরে কলেজে আসা যাবে না। নানা অশালীন কথাবার্তাও বলেন ওঁরা।’’ ওই ছাত্রীর কয়েক জন বন্ধুর দাবি, ‘‘আমরা কয়েক জন ছেলে মিলে ওর সমর্থনে এগিয়ে যাই। তাতে ইউনিয়নের সদস্যেরা আমাদের মারধর করে জামা ছিঁড়ে দেন।’’
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস প্রশ্নে মিছিলে, বইয়ে সরব মমতা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে আসে পাটুলি থানার পুলিশ। কলেজের অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘হাতকাটা কুর্তির উপরে আমার ওড়না ছিল। সত্যিই যদি এই পোশাক আপত্তিকর হত, তা হলে তো কলেজ কর্তৃপক্ষই বারণ করে দিতেন। এটা কী ধরনের দাদাগিরি?’’ ওই ছাত্রীর অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে তাঁকে ইউনিয়নে যোগ দিতে বলা হচ্ছিল। তিনি যোগ না দেওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি ঠিকই। কিন্তু কলেজের প্রিন্সিপ্যালকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এ দিন ওই কলেজের ঘটনার সঙ্গে ছাত্র সংসদের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই পাল্টা দাবি করেছেন কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা। টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমি বিষয়টা খোঁজ নিয়ে দেখেছি। দুই দল পড়ুয়ার মধ্যে গোলমাল থেকে হাতাহাতি হয়েছে। এর সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কোনও ভাবেই জড়িত নয়।’’
দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের অধ্যক্ষ সোমনাথ মুখোপাধ্যায়কে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মেসেজেরও। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের কলেজে পোশাক-বিধি নেই। কী ঘটেছে খতিয়ে দেখা হবে।