Kamala Girls School

এ বার কমলা গার্লস, নাইনের ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ

শনিবার সকালে ওই অশিক্ষক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ‘পকসো’ (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস)  আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১২:২৩
Share:

যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার কমলা গার্লস স্কুলের অশিক্ষক কর্মী। ফাইল চিত্র।

জি ডি বিড়লা, এম পি বিড়লা, কারমেল প্রাইমারি স্কুলের পর এ বার কমলা গার্লস। ফের এক ছাত্রীকে স্কুলের মধ্যেই যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। এ বার আঙুল এক অশিক্ষক কর্মচারীর দিকে। অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করেন তিনি। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

অভিযুক্তের নাম মলয়কুমার বড়ুয়া। শুক্রবার রবীন্দ্র সরোবর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করে ছাত্রীর পরিবার। শনিবার সকালে ওই অশিক্ষক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ‘পকসো’ (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দিন অভিযুক্তকে আলিপুর আদালতে তোলা হবে।

পুলিশ সূত্রে খবর, কমলা গার্লসে বৃহস্পতিবার স্পোর্টস ছিল। ক্লাস নাইনের চার ছাত্রী দোতলার কেমিস্ট্রি ল্যাবে ছিল। গ্রুপ ফোর স্টাফ মলয় বড়ুয়া, কেমিস্ট্রি ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টও। ওই সময় অভিযোগকারিণীর আঙুল কেটে যায়। মলয়ই প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। অভিযোগ, তার পরেই ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন মলয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এ দিন জেরায় শ্লীলতাহানির কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।

Advertisement

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণীর সঙ্গে থাকা কয়েক জন ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। তাই ফের তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা।

শনিবার স্কুলে গেলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শিখা সরকার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তিনি বলেন, ‘‘অর্থাভাবে সর্বত্র সিসি ক্যামেরা বসানো যায়নি। তবে বসানো হবে। তার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’’ কিন্তু স্কুলে পুরুষ শিক্ষাকর্মী না রাখার যে দাবি অভিভাবকেরা তুলেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলের অন্য শিক্ষাকর্মীদের মত, এটা অযৌক্তিক দাবি।

স্কুল সূত্রের খবর, মলয়বাবু প্রায় ১২ বছর ধরে এই স্কুলে কাজ করছেন। এর আগেও এক বার এই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু পরে তদন্ত করে দেখা যায় অভিযোগটি মিথ্যা। এ দিন ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে আগামী সোমবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেওয়া হয়। সোমবার অভিযুক্তকে আলিপুর জেলা দায়েরা আদালতে পকসো ( প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) মামলার শুনানির জন্য নির্দিষ্ট আদালতে তোলা হবে।

সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষালের দাবি, ধৃতকে জেরা করে আরও কিছু তথ্য নেওয়া হবে। তদন্তের স্বার্থে ধৃতের পুলিশি হেফাজত প্রয়োজন ছিল। অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃত শিক্ষাকর্মী ওই স্কুলে বহু বছর ধরে কাজ করছেন। ছাত্রীর হাত কেটে যাওয়ায় তিনি সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। শ্লীলতাহানির অভিযোগে বহু অসঙ্গতি রয়েছে। যার হাত কাটল, তার গায়ে না লেগে, অন্য কারও গায়ে হাত লাগল কী করে?’’

অন্য দিকে, এ দিনই কারমেল স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অভিভাবকরা। স্কুলের নিরাপত্তা, সিসি টিভি লাগানো-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, অভিভাবকদের দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবারই ক্লাস টুয়ের এক ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে কারমেল প্রাইমারি স্কুল। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দেশপ্রিয় পার্কের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি।

আরও পড়ুন: শিশুর ‘যৌন নিগ্রহ’ ঘিরে ধুন্ধুমার কারমেল স্কুলে, ধৃত শিক্ষক

মাসখানেক আগেই জি ডি বিড়লা এবং এম পি বিড়লা স্কুলে পড়ুয়াদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকদের সঙ্ঘাত চরমে পৌঁছয়। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার কারমেল প্রাইমারি স্কুল উত্তাল হল একই অভিযোগে। তার পরই শনিবার প্রকাশ্যে এল কমলা গালর্সের ঘটনা। শহরের স্কুলগুলি কি পড়ুয়াদের নিরাপত্তার বিষয়ে আদৌ ভাবিত? পর দু’দিনের দুটি ঘটনা ফের একবার সেই প্রশ্ন তুলে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন