উত্তেজনা: পুলিশের সঙ্গে বচসা এক অভিভাবকের। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
ক্লাসে উপস্থিতির হার কম। তা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। এমন দাবি নিয়ে স্কুলের পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকেরা রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। কিন্তু সেই চাপের মুখেও ওই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রইল স্কুল। কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলে অনুপস্থিতির হার ক্রমেই বাড়ছিল। তা যে বরদাস্ত করা হবে না, সেই বার্তা দিতেই এমন সিদ্ধান্ত। ঘটনাকে ঘিরে স্কুল চত্বরে পুলিশও পৌঁছে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত অন্যাহ্য দাবি নিয়ে বিফল মনোরথে ফিরে যেতে হয় বিক্ষোভকারীদেরই। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার সাঁতরাগাছি কেদারনাথ ইন্সস্টিটিউশনে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মাসে কম করে ২০ শতাংশ উপস্থিতি না থাকলে কোনও ভাবেই পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ছিল ওই স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণির ইউনিট টেস্টের বাংলা পরীক্ষা। পরীক্ষার আগে স্কুলের পক্ষ থেকে নোটিস টাঙিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় নবম শ্রেণির ৩৬ জন ও দশম শ্রেণির ২৩জনের উপস্থিতির হার অত্যন্ত কম। তাই তারা পরীক্ষায় বসতে পারবে না। যারা পরীক্ষায় বসতে পারবে না তাদের নামও নোটিস বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষার্থীরা তা দেখতে পেয়ে পরিবারের লোকজনকে জানায়। পরিবারের লোকজন অনেকে আবার মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নিয়ে স্কুলে দেখাতে চলে আসেন। কিন্তু হাজার অনুরোধে কাজ না হওয়ায় শেষে অভিভাবক ও পড়ুয়ারা মিলে রাস্তা অবরোধ শুরু করলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোটা এলাকায় যানজট হয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় চ্যাটার্জিহাট থানা থেকে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
স্কুলের অভিভাবকদের দাবি, ক্লাসে উপস্থিতির ব্যাপারে পড়ুয়াদের আগে কিছু জানানো হয়নি। তাই এমন অবস্থা হয়েছে। গনেশ মুখোপাধ্যায় নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘স্কুলে আগে এ সব জানায়নি। পরীক্ষার সময় এ সব কথা জানানো হল কেন?’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রধান শিক্ষক বিজন চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রত্যেক পড়ুয়ার কাছে ব্লু-বুক দেওয়া রয়েছে। তাতে লেখা আছে নিয়মিত ক্লাসে আসতে হবে। উপস্থিতির শতকরা হিসাবের ওপর পরীক্ষায় বসা নির্ভর করবে। বিজনবাবু বলেন, ‘‘শুধু নোটিস দিয়ে নয়, আমি নিজে গিয়ে প্রত্যেকটি ক্লাসে এ কথা বলে এসেছিলাম অনেক আগেই। কিন্তু তার পরেও যাদের ২০ শতাংশ কম রয়েছে তাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে আমার সিদ্ধান্তের কোনও নড়চড় হবে না।’’ প্রধান শিক্ষকের এই অনমনীয় মনোভাব দেখে বিক্ষোভকারী অভিভাবক ও পড়ুয়ারা পিছু হঠেন। অবরোধ তুলে কিছু ক্ষণের মধ্যে রণে ভঙ্গ দেন।