সিন্ডিকেটের সংঘর্ষে উত্তপ্ত নিউ টাউন

ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের বরাত পাওয়া ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল নিউ টাউনের সর্দারপাড়ায়। সোমবার সকালের ওই ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে র‌্যাফ নামে। এলাকা থেকেই জনা কুড়ি ব্যক্তিকে আটক করে নিউ টাউন থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০২:১০
Share:

ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের বরাত পাওয়া ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল নিউ টাউনের সর্দারপাড়ায়। সোমবার সকালের ওই ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে র‌্যাফ নামে। এলাকা থেকেই জনা কুড়ি ব্যক্তিকে আটক করে নিউ টাউন থানার পুলিশ। অভিযোগ, এ ধরনের অন্য ঘটনাগুলির মতো এ ক্ষেত্রেও স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ এবং বিধায়ক— যুযুধান দুই শিবিরের অনুগামী দু’টি সিন্ডিকেটের মধ্যে গোলমাল বাধে।

Advertisement

নিউ টাউনে কোথাও কোনও প্রকল্পের কাজ হলে, তার কারণে জমিহারা মানুষদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়। যে কমিটির নাম ‘মাঠ কমিটি’। কমিটির সদস্যরাই ওই সব প্রকল্পে ইমারতিদ্রব্য সরবরাহ করেন। এ দিন যে এলাকায় গোলমাল হয়, তার মাঠ কমিটিতে রয়েছেন স্থানীয় বালিগড়ি, পাথরঘাটা, লস্করহাটি, যাত্রাগাছি, চক পাচুরিয়ার মতো গ্রামের জমিহারারা।

নিউ টাউন থানার পুলিশ জানায়, এ দিন সর্দারপাড়ায় স্টেট ব্যাঙ্কের শাখা তৈরির জন্য চিহ্নিত একটি জমিতে ইমারতিদ্রব্য সরবরাহের জন্য টোকেন বিলির কথা ছিল। সেই টোকেন তুলতে এসেই সরবরাহকারীদের দুই পক্ষ বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে। বচসা গড়ায় মারামারিতে। তবে ওই এলাকায় সিন্ডিকেটের সমস্যার কথা মাথায় রেখে এ দিন সকাল থেকেই টোকেন বিলির স্থলে মোতায়েন ছিল পুলিশ। তাই বড় ঘটনা এড়াতে প্রথম থেকেই সক্রিয় হয় পুলিশ ও র‌্যাফ। গোলমালকারীদের তাড়িয়ে নির্মাণস্থল থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরেই জনা কুড়ি লোককে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় নিউ টাউন থানায়।

Advertisement

পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য সইদুল ইসলামের দাবি, নিউ টাউনের অন্যতম সিন্ডিকেট নেতা ভজাই ও তার লোকজনই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু পুলিশি তৎপরতায় ঘটনা খুব বেশি দূর এগোয়নি। নিউ টাউনে সইদুল, জাহানারা বিবি, আফতাবুদ্দিনদের মতো তৃণমূল নেতারা স্থানীয় সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের শিবিরের সদস্য বলেই এলাকায় পরিচিত। এ দিন জাহানারা বিবির নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলারাও গোলমালে অংশ নেন বলে অভিযোগ। তাঁদের কয়েক জনকে আটকও করেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। যদিও জাহানারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অন্য দিকে ভজাই ও তার দলবলের যোগাযোগ স্থানীয় বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের সঙ্গে। ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ নিয়ে দুই নেতার অনুগামীদের নিয়ে তৈরি সিন্ডিকেটের মধ্যে অতীতে একাধিক বার ঝামেলা বেধেছে। এ দিনের গোলমালের কারণে শেষ পর্যন্ত টোকেন বিলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাকলিদেবীর অনুগামীদের অভিযোগ, নিজের দলের লোকজন টোকেন না পাওয়ায় বিধায়ক ওই সংস্থায় ফোন করে টোকেন বিলি বন্ধ করে দেন। সব্যসাচীবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘আমি কোনও অসামাজিক কাজকে সমর্থন করি না। পুলিশকে বলা আছে, তেমন কিছু ঘটলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে।

অন্য দিকে, রবিবার রাতে নিউ টাউন থানারই হেলা বটতলায় দুই দুষ্কৃতী দলে বোমা ও গুলির লড়াই হয়। ঘটনায় তিন জন জখম হন। পুলিশের দাবি, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করেই ওই সংঘর্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন