গুন্ডামির সিন্ডিকেট

সিন্ডিকেট থেকে নির্মাণসামগ্রী কেনার হুমকি এসেছিল শুক্রবার সন্ধ্যায়। কিন্তু তা না শোনায় ওই প্রোমোটারের চার নির্মাণকর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০০:১৪
Share:

জখম: এক নির্মাণকর্মী

সিন্ডিকেট থেকে নির্মাণসামগ্রী কেনার হুমকি এসেছিল শুক্রবার সন্ধ্যায়। কিন্তু তা না শোনায় ওই প্রোমোটারের চার নির্মাণকর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল। শুক্রবার রাতে এন্টালির পটারি রোডের ঘটনায় গুরুতর আহত ইউসুফ শেখ একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। আহত বাকি তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের নাম দীপক দাস ওরফে নেটো এবং দেবাশিস চাপরি ওরফে দুষ্টু।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এন্টালির ৩৯, পটারি রোডে বছর দেড়েক ধরে একটি পাঁচ তলা ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ চলছে। তার প্রোমোটার আইনুল আবেদিন বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বাসিন্দা দীপক দাস ওরফে নেটোর লোক ধর্মতলায় অফিসে এসে বলেন, তাঁদের থেকে ইট, বালি, সিমেন্ট, কিনতে হবে। ইতিমধ্যেই অন্য সংস্থার থেকে নির্মাণসামগ্রী নেওয়ায় তাঁদের থেকে নেওয়া সম্ভব নয় বলে তাঁকে জানাই।’’

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত এগারোটা নাগাদ জনা পাঁচেক যুবক নির্মীয়মাণ বাড়িটিতে ঢুকে সইফুল ইসলাম ও জহিরুল শেখ নামে দুই শ্রমিককে রড, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। সেই সময় দোতলায় থাকা নির্মাণকর্মী হেলালউদ্দিন ও ইউসুফ শেখ ঘটনার কথা তিন তলায় থাকা সুপারভাইজার শহিদুল হাসান শেখকে বলতে যান। অভিযোগ, তখন হেলালউদ্দিন ও ইউসুফকে দোতলা থেকে ফেলে দেয় নেটো ও তার দলবল। পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা প্রায় কুড়ি মিনিট ঘটনাস্থলে ছিল। প্রোমোটার ও তাঁর লোকজন আসার আগেই চম্পট দেয় নেটো ও দলবল।

Advertisement

নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটবাড়ির পাশেই থাকেন জমির মালিক অতনু সিনহা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্থানীয়দের হামলার কারণ জিজ্ঞাসা করি। তখন নেটো আমায় হুমকি দিয়ে বলে, তার নেতৃত্বেই এই হামলা চলেছে।’’ এই ঘটনার পর শুক্রবার রাতে প্রোমোটারের তরফে নেটো ও তার দলবলের বিরুদ্ধে এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ রাতেই এন্টালি থেকে দীপক ও দেবাশিসকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের শনিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিকে এন্টালিতে বারবার সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্যের জন্য শাসকদলের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘‘নেটো এলাকার দাগী দুষ্কৃতী। আগে একাধিকবার হাতে ধরাও পড়েছে। অথচ শাসকদলের মদতেই নেটো গত ৬ বছর ধরে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের কাজ করছে। বিশেষত স্থানীয় বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার প্রশ্রয়েই নেটোর এত বাড়বাড়ন্ত।’’ যদিও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে এই ঘটনার কথা শুনেই নেটোকে দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে বলি। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে ফাঁসানোর জন্যই এই সব অপপ্রচার করা হচ্ছে।’’ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর দীপালি দাস জানান, ‘‘আমি নেটোকে চিনি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন