মহিলাকে ‘মারধর’ করে পাকড়াও ট্যাক্সিচালক

পুলিশি ‘জুলুমের’ প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন শহরের ট্যাক্সিচালকেরা। প্রশাসনের তরফেও পাল্টা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ট্যাক্সিচালকদের যাত্রী-প্রত্যাখ্যান কিংবা অভব্য আচরণ কোনও অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না। তাতেও কিন্তু এ শহরে ট্যাক্সিচালকদের জুলুম এতটুকু কমার লক্ষণ নেই।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০০:০১
Share:

পুলিশি ‘জুলুমের’ প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন শহরের ট্যাক্সিচালকেরা। প্রশাসনের তরফেও পাল্টা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ট্যাক্সিচালকদের যাত্রী-প্রত্যাখ্যান কিংবা অভব্য আচরণ কোনও অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না। তাতেও কিন্তু এ শহরে ট্যাক্সিচালকদের জুলুম এতটুকু কমার লক্ষণ নেই।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে যাত্রী-প্রত্যাখ্যানের প্রতিবাদ করায় এক মহিলাকে মারধর এবং বাকিদের গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে রমেশ রায় নামে এক ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে। ডালিয়া সিংহ নামের ওই মহিলার স্বামী আদর্শ সিংহের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ট্যাক্সিচালককে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা পুরসভার বস্তি উন্নয়ন বিভাগের কর্তা আদর্শবাবুর মা এসএসকেএম-এ ভর্তি রয়েছেন। মঙ্গলবার রাত দশটা নাগাদ আদর্শবাবু তাঁর স্ত্রী ডালিয়াদেবী এবং আর এক আত্মীয়কে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য ট্যাক্সি খুঁজছিলেন। এসএসকেএম-এর বাইরে এসে তিনি দেখেন, হরিশ মুখার্জি রোডে একটি ফাঁকা ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে রয়েছে। আদর্শবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগে জানান, তাঁরা রমেশ নামে ওই ট্যাক্সিচালককে বেহালায় যেতে বললে সে প্রত্যাখ্যান করে এবং দুর্ব্যবহারও করে।

Advertisement

এ সব দেখে আদর্শবাবুর ওই আত্মীয় মোবাইলে ট্যাক্সিটির নম্বরপ্লেট-সহ ছবি তুলতে গেলে রমেশ তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। রমেশের গালিগালাজের প্রতিবাদ করেন ডালিয়াদেবী। রমেশ তাঁকেও গালিগালাজ করে এবং ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। পড়ে গিয়ে হাতে আঘাত পান ডালিয়াদেবী। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন আদর্শবাবুরা। কিন্তু ততক্ষণে ট্যাক্সি নিয়ে চম্পট দেয় রমেশ।

ওই রাতেই ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই পুর-কর্তা। তদন্তে নেমে পুলিশ মোবাইলে তোলা ছবির সূত্র ধরে ট্যাক্সির নম্বর পায়। এর পরই বুধবার ওই ট্যাক্সির মালিককে ভবানীপুর থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। মালিক থানায় এসে গোটা ঘটনাটি অস্বীকার করে পুলিশকে জানান, তিনি ওই সময়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন না। গাড়ি চালাচ্ছিলেন ট্যাক্সির চালক। পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ট্যাক্সির মালিক চালক রমেশকে সঙ্গে নিয়ে থানায় আসেন। তখনই পুলিশ গ্রেফতার করে রমেশকে।

মাস দেড়েক আগে ট্যাক্সিচালকদের হাতে প্রহৃত হয়েছিলেন শম্ভুনাথ পণ্ডিত রোডের এক বৃদ্ধা। এ ছাড়া, মাসখানেক আগে ভবানীপুরে বন্ধুর সঙ্গে রাতে বাড়ি ফিরতে গিয়ে মারধর খেতে হয়েছিল ভবানীপুরের এক বাসিন্দাকেও। ওই ঘটনার পরেই ট্যাক্সিচালকদের যাত্রী-প্রত্যাখ্যান রুখতে শহরের বুকে অভিযান শুরু করে কলকাতা পুলিশ। যাত্রী-প্রত্যাখ্যানের অভিযোগে তিন হাজার টাকা করে জরিমানা করাও শুরু হয়। তাতেও যে সব ট্যাক্সিচালকদের হুঁশ ফেরেনি, মঙ্গলবার রাতের ঘটনাতেই তা স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন