সেই ভাঙা মূর্তি। নিজস্ব চিত্র
সল্টলেকের তিন নম্বর সেক্টরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি ভাঙতে দেখে এক যুবককে ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার ভোরের ওই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পেশায় ট্যাক্সিচালক ওই যুবককে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ প্রথমে তাঁকে আটক করে। বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে রাত পর্যন্ত বিধাননগর (দক্ষিণ) থানায় মূর্তি ভাঙা নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
এ দিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাজিয়া শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ওই ট্যাক্সিচালক বিজেপি-র সক্রিয় কর্মী। বিজেপি-র পাল্টা দাবি, ওই ট্যাক্সিচালক তাদের কর্মী নন। বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, এই ধরনের ঘটনা তাঁরা সমর্থন করেন না। বদনাম করতেই বিজেপি-র নাম জড়ানো হচ্ছে।
সল্টলেকের পূর্বাচল এবং ফাল্গুনী আবাসনের মাঝে চার রাস্তার মোড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি মূর্তি রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দত্তাবাদের বাসিন্দা, পেশায় ট্যাক্সিচালক সুজয় মণ্ডল এ দিন ভোরে একটি আধলা ইট দিয়ে ওই মূর্তির একটি অংশ ভেঙে দেন। তাঁর সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন। দৃশ্যটি দেখতে পেয়ে এলাকার লোকজন সুজয়কে আটকে রাখেন। বাকিরা পালিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং সুজয়কে আটক করে। স্থানীয় ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিনু চক্রবর্তী জানান, সকালে ওই ঘটনার কথা শুনেই তিনি সেখানে যান। তাঁর কথায়, ‘‘সুজয় তাঁর অপরাধ স্বীকার করেছেন। এমন ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকে যথাযথ পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’
এলাকাবাসীর দাবি, ধরা পড়ার পরে সুজয় জানিয়েছেন, অন্যের উপরে রাগ করেই তিনি মূর্তি ভেঙেছেন। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মল দত্তের দাবি, সুজয় বিজেপি-র সক্রিয় কর্মী না হলেও তাদের মিটিং-মিছিলে যান, পতাকা-পোস্টার-ফেস্টুন লাগান।
৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তাবাদে সুজয় তাঁর মা বুলু মণ্ডলকে নিয়ে থাকেন। বুলুদেবীর দাবি, ছেলে কোনও দলের সদস্য নয়। তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপি নেতা উমাশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘এমন ঘটনাকে ধিক্কার জানাই। তবে ওই ট্যাক্সিচালক আমাদের কর্মী নন। বদনাম করতেই এই ঘটনায় বিজেপি-র নাম জড়ানো হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ট্যাক্সিচালকের মানসিক অবস্থা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
এলাকাবাসীর দাবি, বিভিন্ন ভাস্কর্য রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসন অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ করুক।