রূপম সরকার। —নিজস্ব চিত্র
ছুটি থাকলে দিনভর মাঠেই ছিল তার ছোটাছুটি। সোমবারও বাড়ির পাশের সেই মাঠে খেলছিল বছর তেরোর রূপম সরকার। সেখানেই একটি মূর্তির স্তম্ভ চাপা পড়ে মৃত্যু হল তার।
ঘটনাটি ঘটেছে বিমানবন্দর থানার মাইকেলনগরের স্বামীজি পার্ক এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মাঠে স্বামী বিবেকানন্দের একটি মূর্তি রয়েছে। মাস দুই আগে সেই মূর্তির উপরে একটি ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তার সিমেন্টের খুঁটিগুলি শক্ত ভাবে বসানো হয়নি। সেই ছাউনি ধরে খেলতে গিয়েই কংক্রিটের স্তম্ভ ভেঙে পড়ে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া রূপমের উপরে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি ছেলেটিকে। তার পরিবার অবশ্য পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা
রুজু করেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, স্বামীজি পার্কের পাশেই বাড়ি রূপমের। বাবা পার্থ সরকার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। মা রমা বিউটি পার্লার চালান। আঁকা, হাতের নানা কাজ ও খেলায় পারদর্শী ছিল রূপম। প্রতিবেশী রাহুল রায় বলেন, “অত্যন্ত প্রাণবন্ত ছেলে ছিল রূপম। সব সময়ে খেলাধুলো নিয়ে মেতে থাকত। স্কুল থেকে ফিরেই মাঠে নেমে দাপাদাপি শুরু করত।”
কী ঘটেছিল সোমবার?
প্রতিবেশীরা জানান, স্কুল ছুটি থাকায় সে দিন দুপুরেই মাঠে খেলতে গিয়েছিল রূপম। মাঠের এক দিকে রয়েছে বিবেকানন্দের মূর্তিটি। স্থানীয় একটি ক্লাব সেটি বসিয়েছিল। পুজোর আগে ওই মূর্তির উপরে ছাউনি গড়া হয়েছিল। কিন্তু যে কংক্রিটের খুঁটির উপরে ছাউনিটি ছিল, তার গোড়া শক্ত ছিল না। ওই খুঁটি ধরেই ঝুলছিল রূপম। তখনই পুরো ছাউনি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।
বড় একটি স্তম্ভের নীচে চাপা পড়ে রূপম। মাঠের পাশে কিছু শ্রমিক কাজ করছিলেন। তাঁরা ছুটে এসে স্তম্ভটি সরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সেটি নড়ানো যায়নি। মিনিট ১৫ পরে রূপমকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ময়না-তদন্তের পরে মঙ্গলবার রাতে রূপমের দেহ আনা হয় পাড়ায়। বড়দিনের রাতে জলসা হওয়ার কথা ছিল সেখানে। সে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।