Hospital

২০ ঘণ্টার চিকিৎসায় বিল ৮৩ হাজার

গত ৮ মে সুনীল ঠাকুর নামে ৫২ বছরের এক প্রৌঢ়কে মাথা ঘোরার সমস্যা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর পরিজনেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০২:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি

অভ্যাস অব্যাহত।

Advertisement

চিকিৎসার জন্য বিরাট অঙ্কের বিল রোগীর পরিবারের উপরে চাপানোর অভিযোগ বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে আকছারই ওঠে। করোনার কারণে এই সময়ে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা করাতে মানুষ হা-পিত্যেশ করছেন। আবার চিকিৎসার ব্যবস্থা হলেও রোগীর পরিবারের উপরে বেসরকারি হাসপাতালগুলি বিপুল খরচের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। অনেক ক্ষেত্রেই সেই বিপুল অঙ্কের বিলের উপযুক্ত হিসেব নিয়েও বিতর্ক থাকছে। যেমন, এ বারে অভিযোগের তির বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

গত ৮ মে সুনীল ঠাকুর নামে ৫২ বছরের এক প্রৌঢ়কে মাথা ঘোরার সমস্যা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, সুনীলবাবু ওই হাসপাতালে মাত্র ২০ ঘণ্টা ছিলেন। কিন্তু তাঁর চিকিৎসার জন্য ৮৩ হাজার টাকা বিল করে হাসপাতালটি। ঘটনার কথা

Advertisement

ফেসবুকে পোস্ট করেন সুনীলবাবুর আত্মীয় মনোজ ঠাকুর। এর পরেই সরব হয়েছেন নেটিজেনরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের অভিযোগ, অতিমারির পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পরিষেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। সেই সুযোগে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল অস্বাভাবিক হারে রোগীর পরিজনেদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে।

প্রৌঢ়ের আত্মীয় মনোজ তাঁর ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ যা জানিয়েছেন, তাতে মাথা ঘোরার সমস্যায় সুনীলবাবু মাত্র কুড়ি ঘণ্টা ওই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার জন্য তাঁদের চিকিৎসার খরচ বাবদ ৮৩ হাজার টাকা বিল মেটাতে বলা হয়। ফেসবুক পোস্টে মনোজের বক্তব্য, ‘‘মাত্র কুড়ি ঘণ্টার জন্য ৮৩ হাজার টাকার চিকিৎসার খরচ অস্বাভাবিক।’’ পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, চারটি ভাইরাল ব্যারিয়ার সেট বা পিপিই-র জন্য ১২ হাজার ৮০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এক একটি এন ৯৫ মাস্কের দাম ধরা হয়েছে ৫০০ টাকা। এ ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে বিলে জানানো হয়েছে।

ওই পোস্টের প্রেক্ষিতে রাজকুমার রায় নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘‘পিপিই-র দাম কোনও ভাবে ৮০০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।’’

ঘটনার কথা জেনে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, মাথা ঘোরার সমস্যা নিয়ে আসা রোগীকে আইসিইউয়ে কেন চিকিৎসা করা হল, সে প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু মাথা কেন ঘুরছে তা জানতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন, বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সেই যুক্তি দেওয়ার অবকাশ রয়েছে। রোগীর পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হলে নথি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের এক আধিকারিক।

অভিযুক্ত ওই বেসরকারি হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাপস মুখোপাধ্যায় জানান, চিকিৎসার খরচ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারেন। তবে খরচের হিসেব বিলে স্পষ্ট করা আছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে। পিপিই এবং মাস্কের দাম প্রসঙ্গে তাপসবাবু বলেন, ‘‘পিপিই, মাস্কের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। আমাদের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য অনেক বেশি দামেই পিপিই কিনতে হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে রোগীর পরিজনদেরও সেই বেশি দাম দিতে হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন