Cyclone Yaas

ঝড়ে জ্বলে উঠল মোমবাতির ব্যবসা

আমপানের পরে বাইপাসের একটি আবাসনে টানা চার দিন বিদ্যুৎ ছিল না। কাজ করেনি ইমার্জেন্সি আলোও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২১ ০৬:২৬
Share:

—ফাইল চিত্র

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সৌজন্যে কয়েকটি দিনের জন্য হলেও কি ফিরে আসছে মোমবাতি আর টর্চের জীবন? আশির বা নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত যা ছিল শহুরে মধ্যবিত্তের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঝড়ে লোডশেডিং হলে বন্ধ থাকবে পাম্প। তাই পানীয় জলও মজুত করে রাখছেন অনেকে। গত বছর আমপানের পরে শহরবাসী বুঝেছিলেন যে, মোমবাতি বা টর্চের দিন এখনও ফুরোয়নি। প্রতিটি বড় ঘূর্ণিঝড়ের আগেই তাদের কথা মনে পড়ে সকলের।
কাঁকুড়গাছির ভিআইপি মার্কেটের মনোহারী দোকানের মালিক সুবীর পাল জানালেন, ওই বাজারের প্রায় প্রতিটি দোকানেই মোমবাতির মজুত শেষ। তিনি বলেন, “সাধারণত, কালীপুজোর সময়ে মোমবাতির চাহিদা বাড়ে। সেই অনুয়ায়ী দোকানে স্টকও বাড়াই। কিন্তু এ বার ঝড়ের জন্য মোমবাতির বিক্রি বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। এখন মাত্র কয়েক ঘণ্টা দোকান খোলা থাকছে। দোকান বন্ধ হওয়ার পরেও অনেকে মোমবাতি চেয়ে ফোন করছেন।” সুবীরবাবু জানালেন, মোমবাতির পাশাপাশি টর্চের ব্যাটারির চাহিদাও এখন খুব বেশি।
আমপানের পরে বাইপাসের একটি আবাসনে টানা চার দিন বিদ্যুৎ ছিল না। তাই পাম্পে জল ওঠেনি। কাজ করেনি ইমার্জেন্সি আলোও।
দেবজ্যোতি মজুমদার নামে এক আবাসিক বললেন, “আমপানের পরে পাড়ার দোকানে মোমবাতি পর্যন্ত ছিল না। পানীয় জলের জন্য চার দিকে হাহকার। এ বার আর ঝুঁকি নিইনি। আগেই মোমবাতি ও জলের বড় জার কিনে রেখেছি।” আর এক আবাসিক জানালেন, সারা রাত জ্বলবে, এমন বড় মোমবাতি কিনতে গিয়েছিলেন দোকানে। দেখেন, ৮০ টাকার বড় মোমবাতি ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাধ্য হয়ে তা-ই কিনেছেন।
শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী অনীশ দাশগুপ্ত জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কথা ভেবে তাঁরা সুকিয়া স্ট্রিটে একটি আশ্রয় শিবির তৈরি করেছেন। সেই শিবিরের জন্য গড়িয়াহাট বাজারে মোমবাতি কিনতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ! অনীশ বলেন, “ওখানে ৫৫ টাকার বড় মোমবাতি ৯০ টাকা চাইছে। কেন দাম বেশি জানতে চাইলে বলছে, জোগান নেই। মাঝারি সাইজের এক প্যাকেট মোমবাতির দামও প্রায় দ্বিগুণ। ঝড়ের পরে কী হবে ভেবে একটু বেশি করে জলের জারও কিনে রেখেছি। সেটার দাম ঠিকই নিয়েছে।”
মোমবাতির এই চাহিদা দেখে সেটিকে ‘আপৎকালীন সামগ্রী’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ওয়্যাক্স বেসড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সমীর দে। তাঁর মতে, “এখন মোমবাতির উৎপাদন কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। গত মাসে পাঁচ টন মোমবাতি তৈরি করলে এ মাসে অন্তত নয় টনের মতো তৈরি করেছি। কিন্তু সরকারি বিধিনিষেধের জন্য ঠিক মতো সরবরাহ করতে পারছি না। ঘূর্ণিঝড়ের জন্য মোমবাতিকে ইমার্জেন্সি আইটেম হিসেবে ঘোষণা করা হোক। তা হলে গাড়ি করে সব জায়গায় মোমবাতি পৌঁছে দেওয়া যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন