কসবার হোটেলে নিহত আদর্শ লোসাল্কা। তাঁর দুই সঙ্গীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কসবার হোটেলে বীরভূমের দুবরাজপুরের বাসিন্দা আদর্শ লোসাল্কাকে খুনের ঘটনায় নতুন তথ্য পেলেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, হোটেলে প্রবেশের সময় কোনও পরিচয়পত্রই জমা দেননি ধৃত তরুণী কমল সাহা। পরিচয়পত্র দিয়েছিলেন কেবল আদর্শ এবং তাঁর সঙ্গী ধ্রুব মিত্র। কমলের কোনও পরিচয়পত্র পায়নি পুলিশ। হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, অনলাইন মাধ্যমে পরিচয়পত্র জমা দিয়েছিলেন তরুণী। পরে তা ফোন থেকে ডিলিট হয়ে গিয়েছে।
কসবাকাণ্ডে হোটেল কর্তৃপক্ষের কোনও গাফিলতি ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তরুণীর পরিচয়পত্রের হদিস পাওয়া যায়নি। লালবাজার সূত্রে খবর, গাফিলতি প্রমাণিত হলে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হতে পারে। তবে শহরের বিভিন্ন হোটেলে এই ধরনের অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পৃথক পদক্ষেপ করা হয়েছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা নজরদারিতে কড়াকড়ির নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী, ইতিমধ্যে হোটেলে হোটেলে ‘সারপ্রাইজ় ভিজ়িট’ শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় থানা এবং ডিভিশনগুলি মিলিত ভাবে হোটেলে হানা দিচ্ছে।
হোটেলের সকল আবাসিক উপযুক্ত পরিচয়পত্র জমা দিয়েছেন কি না, মূলত সেটাই দেখা হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট ঘরে ওই আবাসিকই রয়েছেন কি না, তা যাচাই করে দেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে থানাগুলিকে। পুলিশ সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করছে। পার্কস্ট্রিট এবং কসবার পর হোটেলকে কেন্দ্র করে নতুন কোনও ঝামেলা চাইছে না লালবাজার। তাই এই তৎপরতা।
গত শুক্রবার রাতে কসবার হোটেলে ঢুকেছিলেন আদর্শ, ধ্রুব এবং কমল। দু’টি ঘর ভাড়া করেছিলেন তাঁরা। গভীর রাতে হোটেল থেকে বেরিয়ে যান কমল এবং ধ্রুব। পরের দিন ঘরের মেঝে থেকে উদ্ধার হয় আদর্শের বিবস্ত্র দেহ। তাঁর পা বাঁধা অবস্থায় ছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, আদর্শকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তিনি মদ্যপানও করেছিলেন। এর পর রবিবার কসবা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন দুই অভিযুক্ত। আপাতত দু’জনেই রয়েছেন পুলিশি হেফাজতে।
কসবার এই ঘটনার কিছু দিন আগেই পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলে অনুরূপ ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ কমিশনার জানান, হোটেল কর্তৃপক্ষ কী ভাবে আবাসিকদের সম্পর্কে সতর্ক থাকবেন, তার একটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। সেই মতো নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে থানায় থানায়। এ বার ‘সারপ্রাইজ় ভিজ়িট’ও শুরু হয়ে গেল।