ফাইল চিত্র।
অ্যাপ-মোটরবাইকের পরে এ বার অ্যাপ-সাইকেল। সাফল্য মিলল তাতেও। প্রথম ধাপে মাত্র দু’সপ্তাহেই সাফল্য মেলায় নিউ টাউনে অ্যাপ নির্ভর সাইকেলের সংখ্যা বাড়ছে।
গত ২১ নভেম্বর নিউ টাউন এলাকায় চালু হয়েছিল এই অ্যাপ-নির্ভর সাইকেল পরিষেবা। নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) টেন্ডারিংয়ের ভিত্তিতে ওই পরিষেবার বরাত দেয় জুমকার রেন্টাল সংস্থাকে। যার পরিষেবার নাম পেড্ল (পিইডিএল)। ওই সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২১ নভেম্বর ১৭০টি সাইকেল নিয়ে পরিষেবা চালু করা হয়েছিল। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হচ্ছে ৩০০। ‘‘চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে সংখ্যাটা ১০ হাজারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে’’— বলেন সংস্থার অন্যতম কর্তা সান্নিধ্য মহাপাত্র।
বছর দুয়েকের মধ্যেই নিউ টাউন-রাজারহাট এলাকায় সাফল্য মেলায় বিধাননগর এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে অ্যাপ-মোটরবাইক পরিষেবা। একাধিক সংস্থা নিউ টাউন এলাকায় বাইক-ট্যাক্সি চালিয়ে সাফল্য পেয়েছে। একই পথে হাঁটতে চলেছে অ্যাপ-সাইকেলও।
সারা দেশের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা নজিরবিহীন বলে দাবি করছেন এনকেডিএ-র প্রধান দেবাশিস সেন। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে নির্দিষ্ট একটি গণ্ডি বা ক্যাম্পাসের মধ্যে অ্যাপ-সাইকেল চালু হয়েছে। এই প্রথম একটি শহর এলাকায় অ্যাপ-সাইকেল চালু হল।’’ তিনি জানান, এই পরিষেবা নিউ টাউনকে গ্রিন সিটি হিসেবে গড়ে তোলার অন্যতম ধাপ।
কী ভাবে মিলছে এই পরিষেবা?
নিউ টাউন এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সাইকেল স্ট্যান্ড। বর্তমানে তার সংখ্যা ১৫টি। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে। প্রথমে পেড্ল অ্যাপে সাইকেল বুক করতে হবে গ্রাহককে। এর পরে সাইকেল স্ট্যান্ডে গিয়ে অ্যাপ থেকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া সাইকেলে গিয়ে ‘কিউ আর’ কোড মোবাইলে স্ক্যান করতে হবে। ‘কিউ আর’ কোড মিলে গেলেই খুলে যাবে সাইকেলের তালা। এ বার ইচ্ছেমতো সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন গ্রাহক। সাইকেল চড়া শেষ হলে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড কিংবা সংস্থার নির্দিষ্ট করে দেওয়া আরও ১৫টি জায়গা অথবা স্রেফ রাস্তার ধারে, ফাঁকা কোনও জায়গায় রেখে দিলেই হবে। এমনিতে প্রতি ৩০ মিনিটের জন্য ভাড়া ১০ টাকা। তবে পাইলট প্রকল্প চলার সময়ে প্রতি ৩০ মিনিটের জন্য ভাড়া নেওয়া হচ্ছে মাত্র ১ টাকা। তবে নিউ টাউনের রাস্তায় নির্দিষ্ট করে দেওয়া সাইকেল লেন, সার্ভিস রোড এবং গলি ছাড়া বড় রাস্তায় একেবারেই অ্যাপ-সাইকেল চালানোর অনুমতি নেই।
সান্নিধ্যবাবু জানাচ্ছেন, প্রতি দিন ৩০০ থেকে ৩৫০টি বুকিং পাচ্ছেন তাঁরা। বেশির ভাগ যাত্রীই নিউ টাউনের বাসিন্দা। অফিস থেকে বাড়ি বা বাড়ি থেকে অন্যত্র যেতে সাইকেল ব্যবহার করছেন তাঁরা। সান্নিধ্যবাবু বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের কাছে এই পরিষেবা খুবই সাড়া ফেলেছে। গন্তব্যে যাওয়া ছাড়াও তাঁরা এই সাইকেল ব্যবহার করছেন স্রেফ শারীরচর্চার মাধ্যম হিসেবে। তাতে যেমন ফিটনেস বাড়ছে, তেমনই বেড়ানো হচ্ছে।’’