তোড়জোড়: খাল থেকে পলি নিষ্কাশন চলছে। নিজস্ব চিত্র
খালের দু’ধারে ঘিঞ্জি বসতি। কিন্তু মশার দাপটে টিকতে পারছিলেন না বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে কসবা থানা এলাকার নস্করহাট খাল সংস্কারের দাবি ছিল। মাস খানেক হল সে কাজে হাত দিয়েছে রাজ্য সেচ দফতর। খালটি সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে দু’পাড়ে সৌন্দর্যায়ন হবে।
শহর কলকাতার দক্ষিণের কসবার নস্করহাটের এই খাল মিশেছে বিদ্যাধরী নদীতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বাম আমল থেকে খালটি অবহেলায় পড়ে রয়েছে। নোংরা, আবর্জনা মিশে ওই জল থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। মশাবাহিত রোগের উপদ্রবও বাড়ছে। গত বছর ওই খালপাড়ে অনেকেই ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়েরা।
পেশায় দিনমজুর, বছর পঞ্চাশের যাদব মণ্ডলের কথায়, ‘‘ছোট থেকেই দেখে আসছি, খালটি এমন মজে রয়েছে। জলের গতি না থাকায় মশা জন্মায়।’’ তবে খালের জলে জঞ্জাল ফেলার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদেরই দায়ী করেছেন কেউ কেউ। তাঁদের অভিযোগ, বাড়ি থেকে পুরসভার জঞ্জাল ফেলার গাড়ি আবর্জনা
সংগ্রহ করে, এলাকায় ভ্যাটও রয়েছে তবু স্থানীয় বাসিন্দারা খালে ময়লা ছুঁড়ে ফেলেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও প্রায় ছ’বছর একই অবস্থা ছিল। বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে পুর প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও বহুদিন হেলদোল ছিল না প্রশাসনের। এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। স্থানীয় কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘খালটি রাজ্য সেচ দফতরের অধীনে। পূর্বতন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই খাল সংস্কারের বিষয়ে জানানো হয়েছিল। পরে তা নিয়ে একটি প্রকল্পও তৈরি করা হয়েছিল।’’
রাজ্য সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, মেট্রোপলিটন ড্রেনেজ সাবডিভিশন (২)-এর পক্ষ থেকে ওই কাজ করা হচ্ছে। তিনি জানান, খালের পলি তোলার পাশাপাশি দু’পাড় কংক্রিটে বাঁধানো হচ্ছে। সিসি১ খাল থেকে ই এম বাইপাসের ধারে একটি রেস্তরাঁ পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার খালের দু’পাড় বরাবর ছ’ফুট পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, খালপাড়ের বাসিন্দাদের অনেকেরই প্রবণতা হল বাড়ির আবর্জনা খালে ছুড়ে ফেলা। সেটা রুখতেই পাঁচিল উঁচু করা হচ্ছে। এ ছাড়া দু’পাড় জুড়ে গাছ লাগানো হবে। আলো দিয়ে সাজানো হবে চত্বর। এ সবের জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে।