Kolkata Metro

Kolkata Metro: চাকা ক্ষয়ে যাচ্ছে, পর পর বসে যাচ্ছে রেক! নজিরবিহীন সঙ্কটে কলকাতা মেট্রো

আগামী শনিবার রেলমন্ত্রীর মেট্রো পরিদর্শনে আসার কথা। তার আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার তৎপরতা চলছে বলে জানাচ্ছেন এক মেট্রোকর্তা।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৫০
Share:

তড়িঘড়ি নামানো হয়েছে এই রেক। নিজস্ব চিত্র।

নজিরবিহীন সঙ্কটে কলকাতা মেট্রো। অজানা কোনও কারণে একের পর এক এসি রেকের চাকা ক্ষয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমনই যে, রাতারাতি সাতটি এসি রেককে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। একই রোগে আরও কিছু রেকের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় মেট্রো চলছে ধীরে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে সাময়িক ভাবে নন-এসি রেক ফিরিয়ে আনার কথাও ভাবতে হচ্ছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।

Advertisement

চাকার এই অসুখের কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কবি সুভাষ এবং দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে মেট্রোপথের বিভিন্ন অংশে গতিবেগ নিয়ন্ত্রণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মেট্রোর চালকদের একাংশ জানাচ্ছেন, টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষের দিকে মাটির উপরের অংশে চড়াই পথে গতিবেগ সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটারের নীচে বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

গতিবেগ বেশি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে। নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর যাওয়ার পথে বরাহনগর স্টেশনের আগে ওই গতিবেগ প্রায় ১৫ কিলোমিটারে ঠেকেছে বলে সূত্রের খবর। আধিকারিকদের একাংশের দাবি, বরাহনগর মেট্রো স্টেশনের বাড়তি উচ্চতা এবং ওই অংশে বাঁকের কারণে চাকার ক্ষয় সব চেয়ে
বেশি। ওই অংশে লাইনে ইস্পাতের গুঁড়ো পড়ে থাকার কথাও জানিয়েছেন মেট্রোর কর্মীদের একাংশ। আইসিএফ-এর মেট্রো রেকের চাকার দুর্বলতা, না কি লাইনের ত্রুটি, কী কারণে ওই সমস্যা, তা নির্ণয় করা নিয়েও দ্বন্দ্ব বেধেছে।

Advertisement

মেট্রো সূত্রের খবর, এসি রেকের চাকার ‘ফ্লেঞ্জ’ বিপজ্জনক ভাবে ক্ষয়ে সরু হয়ে যাচ্ছে। কী এই ফ্লেঞ্জ? চাকার দু’প্রান্তে কানার মতো উঁচু অংশ। যা চাকাকে লাইনের উপরে থাকতে সাহায্য করে। স্বাভাবিক অবস্থায় ফ্লেঞ্জের উচ্চতা ২৮.৫ মিলিমিটার। মেট্রো সূত্রের খবর, অস্বাভাবিক ঘর্ষণের কারণে চাকার দু’প্রান্তের ফ্লেঞ্জের দিক গভীর এবং ধারালো হয়ে গিয়েছে। ফলে ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। চালকদের বড় অংশই ওই ঝুঁকির কথা মানছেন। মেট্রো সূত্রের খবর, এই সমস্যার কথা নোয়াপাড়া কারশেডের পক্ষ থেকে অনেক আগেই কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি সে ভাবে গুরুত্ব পায়নি বলে অভিযোগ। আচমকা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ট্রেন বসিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তা সামাল দিতে হচ্ছে, জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা।মেট্রোর নোয়াপাড়া কারশেডের ‘হুইল টার্নিং শেড’-এ চাকার ফ্লেঞ্জ কাটাই চলছে। সেখানকার তিনটি ইউনিটে দিনরাত কাজ চালাতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো থেকেও কর্মী নিয়ে আসা হয়েছে। ওই তিনটি ইউনিট যথেষ্ট না হওয়ায় একটি রেককে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের নারকেলডাঙা কারশেডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মেট্রো সূত্রের খবর, আইসিএফ-এর নতুন রেকগুলির মধ্যে ৪০১, ৪০৪, ৪০৫, ৪১৩ ওই রোগে আক্রান্ত। রয়েছে পুরনো এসি রেকও।

সূত্রের খবর, সমস্যা চরমে পৌঁছনোয় সপ্তাহ দুয়েক আগে এসে পৌঁছনো মেধা সিরিজের ১৭ নম্বরের রেকটিকেও তড়িঘড়ি যাত্রী পরিষেবায় নামাতে হয়। আগামী শনিবার রেলমন্ত্রীর মেট্রো পরিদর্শনে আসার কথা। তার আগে তড়িঘড়ি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার তৎপরতা চলছে বলে জানাচ্ছেন এক মেট্রোকর্তা।

মেট্রো রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, ‘‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চার-পাঁচটি বাঁকের জায়গায় মেট্রোর গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ওই সব অংশে লাইনের রক্ষণাবেক্ষণ চলছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন