গ্রিল কেটে অফিসে চুরি

সকালে অফিসে ঢুকে এক কর্মী দেখলেন, অফিস লণ্ডভণ্ড। লকার ভাঙা, টাকা উধাও। অফিসের এক দিকের জানলা খোলা, গ্রিল ভাঙা। ওই কর্মী অফিসের কর্তাদের ও স্থানীয় লেক থানায় খবর দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৩২
Share:

সকালে অফিসে ঢুকে এক কর্মী দেখলেন, অফিস লণ্ডভণ্ড। লকার ভাঙা, টাকা উধাও। অফিসের এক দিকের জানলা খোলা, গ্রিল ভাঙা। ওই কর্মী অফিসের কর্তাদের ও স্থানীয় লেক থানায় খবর দেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে লেক থানার গড়িয়াহাট রোড (দক্ষিণ)-এর এক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার অফিসে। ওই রাতে অফিসের একটি জানলার গ্রিল কেটে এবং দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে তিন দুষ্কৃতী। ওই সংস্থার দাবি, দু’টি ল্যাপটপ-সহ নগদ কয়েক হাজার টাকা, অফিসের বিভিন্ন নথি নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি তাদের।

সংস্থার এক কর্মী শেখর রায় এ দিন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নির্দিষ্ট সময়ে অফিস বন্ধ করা হয়েছিল। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ অফিস খোলার সময়ে এক কর্মী এসে ঘটনাটি দেখেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই অফিসে বেশ কয়েকটি সিসিটিভি। লুঠের আগে দুষ্কৃতী দলটি সিসিটিভি নষ্ট করার চেষ্টাও করে। কিন্তু সব ক্যামেরা নষ্ট করতে পারেনি। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে, রাত তিনটে নাগাদ ওই দুষ্কৃতীরা কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে অফিসে ঢোকে। প্রথমে তারা অফিসের বিভিন্ন ঘরে তল্লাশি করে। তার পরে অফিসের একটি লকার ভেঙে নগদ কয়েক হাজার টাকা ও ল্যাপটপ নিয়ে সাড়ে তিনটে নাগাদ চম্পট দেয়। সেলিমপুরের মতো জনবহুল এলাকায় এই চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠছে এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়েও।

লালবাজার সূত্রে খবর, এই চুরির সঙ্গে সপ্তাহ দুয়েক আগে সিঁথির প্রবীণ সেতার শিল্পী মণিলাল নাগের বাড়ির চুরির মিল রয়েছে। ওই অফিসের মতোই ভোররাতে মণিলালবাবুর বাড়ির জানলার পাল্লা খুলে, গ্রিল কেটে ভিতরে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, দু’টি চুরির পিছনে রয়েছে একটিই দল।

অন্য দিকে, মঙ্গলবার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় বাঁশদ্রোণীর নিউ গভর্নমেন্ট কলোনির এক বাড়িতে হানা দিয়েছিল দুষ্কতীদের একটি দল। তারা অস্ত্র দেখিয়ে কয়েক হাজার টাকা, গয়না ও মোবাইল লুঠ করে চম্পট দেয়। তিন দিন পেরোলেও ওই লুঠের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তবে লালবাজারের গোয়েন্দাদের দাবি, ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুষ্কৃতীদের স্কেচ আঁকানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ওই ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার একটি দুষ্কৃতী দল জড়িত।

সল্টলেকে চুরি। পুজোর আগে সল্টলেকে ফের সক্রিয় হয়েছে দুষ্কৃতীদল। বৃহস্পতিবার দু’টি ব্লকে বাড়ি থেকে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দু’ক্ষেত্রেই শুক্রবার বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার এ-ই ব্লকের একটি বাড়িতে গয়না, মোবাইল-সহ বেশ কিছু জিনিস চুরি যায়। বাড়ির গৃহকর্তা প্রসূন ঘোষ পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই দিন সকালে বাড়িতে কেউ ছিল না। রাতে ফিরে তিনি চুরির বিষয়টি টের পান। পুলিশ জানায়, বাড়ির পিছনের জানলার গ্রিল ভেঙে ভিতরে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা।

অন্য দিকে, সল্টলেকের বি-এ ব্লকে একটি বাড়ির নীচে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির পিছন দিকের কাচ খুলে ভিতর থেকে মিউজিক সিস্টেম চুরি হয়। গৃহকর্তা অমিতাভ মজুমদার জানান, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ওই ব্লকেই দু’টি বাড়ির গাড়ি থেকে এ ভাবে চুরির ঘটনা ঘটল।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরপর চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। পুলিশের নজরদারি পর্যাপ্ত নয়। অভিযোগ অস্বীকার করে বিধাননগর পুলিশের এক কর্তার দাবি, নজরদারি আগের থেকে বেড়েছে। পুলিশি অভিযানে একের পর এক দুষ্কৃতী ধরাও পড়ছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ফের কোনও একটি চক্র সক্রিয় হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত চক্রটিকে ধরা হবে বলে জানান ওই কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন