প্রতীকী ছবি।
প্যাডেল রিকশার সঙ্গে পাল্লা দিতে বছর কয়েক ধরেই শহরের রাস্তায় নেমে পড়েছে ব্যাটারিচালিত বা মোটরচালিত রিকশা। সল্টলেকও এর ব্যতিক্রম নয়। ধীরে ধীরে বাড়ছে এই রিকশার সংখ্যা। যাত্রীদের দাবি, সময় এবং শ্রম বাঁচিয়ে চলা এই বিশেষ রিকশা ঘণ্টায় ১৫-২০ কিলোমিটার গতিতে দৌড়িয়ে অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। ফলে ক্রমেই বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা।
বিধাননগর পুলিশ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ব্যাটারি বা মোটরচালিত রিকশাগুলির কোনও অনুমতি নেই। এমনকী নজরদারিরও বাইরে ওই বিশেষ রিকশা। বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে এর ‘গতি-বিধি’ নিয়ে। সম্প্রতি সল্টলেকের বৈশাখী মোড়ের কাছে এমনই এক রিকশার সঙ্গে চার চাকার গাড়ির সংঘর্ষে কয়েক জন যাত্রী আহত হন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। যাত্রীদের অভিযোগ, এমন রিকশায় গতি আছে ঠিকই, তবে বেশ বিপজ্জনক। জোরে চালাতে শুরু করলে নিয়ন্ত্রণে আনা মুশকিল। এর জেরেই দুর্ঘটনা ঘটছে।
সল্টলেকের এফডি ব্লক থেকে একটি মোটরচালিত রিকশায় ওঠেন তমাল দত্ত নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। গতি বাড়িয়ে চালাতে গিয়ে একটি গাড়ির মুখোমুখি পড়ে যায় সেই রিকশা। তা কাটাতে গিয়ে সেটি সোজা ধাক্কা মারে বুলেভার্ডে। রিকশা থেকে পড়ে যান তমালবাবু। তাঁর মতে, সাধারণ রিকশার চেয়ে বড় হলেও এর ব্রেক তত জোরালো নয়। সেই সঙ্গে সরু চাকা ব্রেক কষলেও চাপ নিতে না পেরে এ ভাবেই দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ দিকে নয়া রিকশা-বিতর্ক থেকে হাত তুলে নিচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘সাধারণ রিকশার ক্ষেত্রে পুরসভার ভূমিকা থাকে। কিন্তু মোটরচালিত বা ব্যাটারিচালিত কোনও যানের ক্ষেত্রে পুরসভার অনুমোদন দেওয়ার অধিকার নেই।’’
রিকশাচালকদের একাংশের কথায়, তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে সল্টলেকে যাত্রী পরিষেবা দিয়ে আসছেন। তাঁদের নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডও রয়েছে। ভাড়ার ক্ষেত্রেও অনেকটা রাশ টানা থাকে। আচমকা স্ট্যান্ডহীন, নির্দিষ্ট ভাড়াহীন এই নয়া রিকশাগুলি বিধাননগরে ঢুকে থাবা বসাচ্ছে তাঁদের রোজগারে। তুলনায় দ্রুত গতির এবং বহরেও চওড়া নয়া রিকশা অনেক যাত্রীর পছন্দের তালিকায়। তাই বাধ্য হয়েই মোটরচালিত রিকশা চালানোর দিকে ঝুঁকছেন পুরনো চালকেরা।
যেহেতু মোটর বা ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স দেওয়ার ভার পুরসভার নয়, সে ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের নজরের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে এই নয়া যান। বাসিন্দাদের মতে, সকলের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে পুরসভা অন্তত নির্দিষ্ট দফতরে এই বিষয়ে আলোচনা করুক। বিধাননগর পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, মোটরচালিত এবং ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলি সম্পর্কে খোঁজখবর করা হবে। প্রয়োজনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’