E-Waste

বাতিল মোবাইল, কম্পিউটার নিয়ে কী করণীয়, বলবেই-বর্জ্যের নয়া আইন

প্রস্তাবিত নতুন আইনে বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী প্রস্তুতকারক, ই-বর্জ্য সংগ্রাহক, প্রক্রিয়াকরণে নিযুক্ত সংস্থা-সহ সব পক্ষের নির্দিষ্ট দায়িত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৭
Share:

ই-বর্জ্যের সিংহভাগ প্রক্রিয়াকরণ হয় অসংগঠিত ক্ষেত্রে। প্রতীকী চিত্র।

আগামী পয়লা এপ্রিল থেকে দেশে ই-বর্জ্যের বর্তমান আইনে পরিবর্তন আসতে চলেছে। নতুন আইনে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ই-বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণে।

Advertisement

ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। প্রস্তাবিত নতুন আইনে বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী প্রস্তুতকারক, ই-বর্জ্য সংগ্রাহক, প্রক্রিয়াকরণে নিযুক্ত সংস্থা-সহ সব পক্ষের নির্দিষ্ট দায়িত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সুসংহত ভাবে ই-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পোর্টালে সব পক্ষকে নথিভুক্ত করতে হবে। সেখানে কত পরিমাণ বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী তৈরি হচ্ছে, কতটা বিক্রি হচ্ছে, ই-বর্জ্যের পরিমাণ, ই-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থার সঙ্গে বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী প্রস্তুতকারকের চুক্তি, প্রক্রিয়াকরণ হওয়া ই-বর্জ্যের পরিমাণ— এমন হাজারো খুঁটিনাটি আপলোড করতে হবে। স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্বীকৃত সংস্থা ছাড়া অন্য সংস্থার সঙ্গে কেউ ই-বর্জ্য লেনদেন করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের এক কর্তা বলছেন, ‘‘বর্তমানে চালু থাকা ২০১৬ সালের ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা্ আইনের পরিবর্তে ২০২২ সালের ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন চালু হবে পয়লা এপ্রিল থেকে। নতুন আইনে ই-বর্জ্য নিয়ে সচেতনতা প্রচারেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ, বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও ই-বর্জ্য নিয়ে কী করণীয়, তা জানেন না বেশির ভাগ নাগরিকই।’’

আর সেই কারণেই ই-বর্জ্যের সিংহভাগ প্রক্রিয়াকরণ হয় অসংগঠিত ক্ষেত্রে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বর্জ্য থেকে মূল্যবান অংশ বা দামি পদার্থ আলাদা করেন কর্মীরা। সেই কাজ হয় অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। এর প্রধান কারণ, সারা দেশে স্বীকৃত ই-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থার অপ্রতুলতা। আর একটি কারণ হল, বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন সামগ্রী প্রস্তুতকারক, সংগ্রাহক সংস্থা এবং প্রক্রিয়াকরণ সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব।

Advertisement

অথচ পরিসংখ্যান বলছে, ই-বর্জ্যের নিরিখে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে ভারত। ২০১৯ সালে ভারতে ই-বর্জ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩২ লক্ষ টন। সেখানে দেশে মোট ৫৩০টি ই-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটের সম্মিলিত ক্ষমতা প্রায় ১৫ লক্ষ টন। অর্থাৎ, অর্ধেকেরও বেশি ই-বর্জ্য থেকে যায় বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার বাইরে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, ২০১৭-’১৮ সালে দেশে উৎপাদিত ই-বর্জ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭ লক্ষ টন। তার মধ্যে প্রক্রিয়াকরণ হয়েছিল মাত্র ৬৯ হাজার টন! আবার, ২০১৮-’১৯ এবং ২০১৯-’২০ সালে দেশে ই-বর্জ্যের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৭.৭১ লক্ষ টন এবং ১০.১৪ লক্ষ টন। ওই দুই বছরে প্রক্রিয়াকরণের আওতায় এসেছিল যথাক্রমে ১.৬৪ লক্ষ এবং ২.২৪ লক্ষ টন। পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘অসংগঠিত ক্ষেত্রে ই-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাকে মূল স্রোতে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন