নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দেদার ধূমপান ভেন্ডার কামরায়

লোকাল ট্রেনের ভেন্ডার কামরায় সন্ধ্যার অফিস টাইমের ভিড়। কামরার গায়ে রেলের তরফে লেখা, ‘ধূমপান নিষেধ’।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০১:৫৩
Share:

ট্রেনের ভেন্ডার কামরায় চলছে ধূমপান। নিজস্ব চিত্র

লোকাল ট্রেনের ভেন্ডার কামরায় সন্ধ্যার অফিস টাইমের ভিড়। কামরার গায়ে রেলের তরফে লেখা, ‘ধূমপান নিষেধ’। কিন্তু সেই সতর্কবার্তা দেখছে কে? ভিড়ের মধ্যেই এক যাত্রী বিড়ি খাচ্ছেন। আচমকা জ্বলন্ত বিড়ি ছিটকে পড়ল কামরার এক কোণে। তাতে অবশ্য ভ্রূক্ষেপ নেই তাঁর। নির্বিকার মুখে ওই যাত্রী দ্বিতীয় বিড়িটি ধরিয়ে ফেললেন। জ্বলে থাকা প্রথম বিড়িটি থেকে আগুন লাগার আশঙ্কা আছে কি না, সেটা অবশ্য তিনি ভেবে দেখলেন না।

Advertisement

সম্প্রতি এমনই ছবি দেখা গিয়েছে বিধাননগর-ব্যারাকপুর লোকালে। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, এমন তো আকছারই ঘটে। শুধু ভেন্ডার নয়, অন্য কামরাতেও। কেউ আপত্তি জানালে ধূমপায়ীরা জবাব দেন, ‘‘ও সব নিয়ম ভেন্ডার কামরার জন্য নয়।’’ যদিও পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, রেলপুলিশের নিয়মিত নজরদারির ফলে চলন্ত ট্রেনে ধূমপান অনেকটাই বন্ধ করা গিয়েছে।

নিত্যযাত্রীদের অভিজ্ঞতা আরও বলছে, আপ ও ডাউন দু’লাইনেই ভেন্ডার কামরায় বসে তাসের আসর। একই সঙ্গে চলতে থাকে ধূমপান। অভিযোগ, সিগারেট বা বিড়ির সঙ্গে মিশিয়ে মাদক সেবনও করা হয়। অনেক সময়ে কামরার মেঝেতেই জ্বলন্ত বিড়ি বা সিগারেট ফেলে, পা দিয়ে ঘষে নেভানো হয়। এ থেকে আগুন লাগার আশঙ্কা থাকলেও ধূমপায়ীরা তাতে গুরুত্ব দিতে রাজি নন। উল্টে কেউ প্রতিবাদ জানালে তাঁকেই হেনস্থার মুখে পড়তে হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অয়ন মুখোপাধ্যায় নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘ভেন্ডারে শুকনো পাতা, খড় ও বিচালি ছড়িয়ে থাকে। সিগারেট বা বিড়ির আগুন তার উপরে পড়লে যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু তা দেখছে কে? তাসের আড্ডার সঙ্গে নাগাড়ে চলতে থাকে ধূমপান।’’

নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, বিধাননগর-ব্যারাকপুর লোকাল, দমদম-ব্যারাকপুর লোকাল, কৃষ্ণনগর-শিয়ালদহ লোকাল সহ মেন লাইনের বহু ট্রেনে ধূমপান বা তাসের আসর অতি পরিচিত ছবি। বাদ যায় না বনগাঁ শাখার বিভিন্ন ট্রেনও। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘ভেন্ডার কামরা কি ট্রেনের অন্য সাধারণ কামরার থেকে আলাদা? কেন সে দিকেও রেল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ নজর দেবেন না?

যাত্রীরা এ-ও জানিয়েছেন, শহরতলির প্রায় প্রতি স্টেশনে সিগারেট-বিড়ি বিক্রি হয়। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘এমন অনেক পানের দোকান রয়েছে যেখানে লুকিয়ে সিগারেট-বিড়ি বিক্রি হয়। সে সব জায়গায় রেলপুলিশের নজরদারির বিশেষ প্রয়োজন।’’

যাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ট্রেনে ধূমপান আইনত দণ্ডনীয়। অনেক ক্ষেত্রেই এ সব নজরে পড়লে রেলপুলিশ ব্যবস্থা নেয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়। ওই শাখাগুলিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন