পরপর দু’দিন হুমকি-ফোন নবান্নে

বার বার চেষ্টা করেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তিনি। উল্টে দু’বার পুলিশ তাঁকে অনেকক্ষণ ধরে জেরা করে। এতেই ক্ষেপে গিয়ে ‘নবান্ন উড়িয়ে দেওয়া হবে’ বলে ফোন করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৪৮
Share:

বার বার চেষ্টা করেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তিনি। উল্টে দু’বার পুলিশ তাঁকে অনেকক্ষণ ধরে জেরা করে। এতেই ক্ষেপে গিয়ে ‘নবান্ন উড়িয়ে দেওয়া হবে’ বলে ফোন করেন তিনি।

Advertisement

শুক্রবারের পরে শনিবার, নবান্নে ফের হুমকি-ফোন আসার তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। শনিবারের ফোনের পরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। জোরদার হয় নবান্নের নিরাপত্তা। যিনি ওই ফোন করেছিলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে নবান্ন উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে শুক্রবার ফোন করেছিলেন সুমন্ত ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি। হাওড়ার আমরাগড়ির জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা সুমন্তকে ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয়। সুমন্ত পুলিশকে জানিয়েছিল, বন্ধুদের সঙ্গে নিছক মজা করার ফাঁকে নবান্নে সে ওই ফোনটি করেছিল।

Advertisement

জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ছ’টা নাগাদ ফোনটা আসে হাওড়া সিটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে। ওপারে এক মহিলা কণ্ঠ। বলেন, তাঁর কাছে নবান্ন উড়িয়ে দেওয়া হবে বলে খবর আছে। তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ফোনটি করেছিলেন বেবি ঘোষ নামে এক মহিলা। তাঁর বাড়ি জগাছা থানা এলাকার ঊনসানির কাছারিপাড়ায়।

পুলিশকে বেবি জানিয়েছেন, মাস ছয়েক আগে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তার কড়াকড়িতে দেখা করতে পারেননি। বেবিকে সে বার লালবাজারে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এর পরে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বেশ কয়েকটি কবিতা লেখেন বেবি। সেগুলি তাঁকে দেওয়ার জন্য এবং মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত সমস্যার কথা জানাতে নবান্নে যান তিনি। কিন্তু সেখানেও তাঁকে আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বেবি পুলিশকে জানান, এই দু’টি ঘটনায় তিনি ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী উপর। সেই ক্ষোভ উগরে দিতেই এই ফোন।

পরপর দু’দিন নবান্ন উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দু’টি ফোন আসায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। শনিবার সারা রাত বেবিকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫, ৫০৭ এবং ১২০ (বি) ধারায়।

পুলিশ আরও জেনেছে, বেবি ঘোষের স্বামী গৌতম ঘোষ ডায়াবেটিসের রোগী। বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা একমাত্র ছেলের সামান্য আয়েই সংসার চলে। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘ছেলের একটা চাকরির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বারবার ছুটে গিয়েছে আমার স্ত্রী। প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা ‌করতে গিয়ে পুলিশ তাঁকে লালবাজারে দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখে হেনস্থা করে। মমতার ভক্ত আমার স্ত্রী। ফের ছেলের চাকরির জন্য দেখা করার চেষ্টা করে। তার পরে কী হয়েছে আমি জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন