কফি শপে ডাকাতিতে ধৃত ৩

পুরনো রাগ মেটাতে সল্টলেকের এডি ব্লকের কফি শপে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল বিপণির প্রাক্তন কর্মচারী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১৬
Share:

পুরনো রাগ মেটাতে সল্টলেকের এডি ব্লকের কফি শপে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল বিপণির প্রাক্তন কর্মচারী। ঘটনার কিনারা করে রবিবার এ কথা জানিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট। সশস্ত্র ডাকাতির অভিযোগে প্রাক্তন কর্মচারী শঙ্কর দাস-সহ আরও দু’জনকে গাইঘাটার চাঁদপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম বিল্টু সরকার ও সুরজিৎ রায়।

Advertisement

গত সোমবার সকালে কফি শপে চড়াও হয় দুই দুষ্কৃতী। তখন সবে বিপণি খুলে কাজ শুরু করেছিলেন কর্মী শুভঙ্কর ঘোষ। শুভঙ্কর জানিয়েছিলেন, দু’জন বিপণিতে ঢুকে বলে, বাবু তাদের পাঠিয়েছে। শুভঙ্কর জানান, তিনি কোনও বাবুকে চেনেন না। তাঁর কথা শেষ না হতেই দুই যুবক চড়াও হয়ে শুভঙ্করের হাত-পা এবং চোখ বেঁধে ফেলে। তার পরে ক্যাশবাক্স থেকে চলে লুটপাট।

পুলিশ সূত্রের খবর, কফি শপ থেকে বেরোনোর সময়ে এক জনকে মোবাইলে কথা বলতে শুনেছেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন শুভঙ্কর। সেই সূত্রে ওই সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সক্রিয় থাকা মোবাইলের তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, তখন পাঁচ হাজার ছশো মোবাইল সক্রিয় ছিল। তার মধ্যে তিনটি নম্বর বন্ধ দেখে তদন্তকারীদের সন্দেহ হয়। ওই নম্বরগুলির ঠিকানা খতিয়ে দেখার পরে রহস্য ভেদ করতে দেরি হয়নি। এ দিন গাইঘাটার ওই এলাকায় হানা দিয়ে ধরা হয় অভিযুক্তদের।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা জেরায় দোষ কবুল করেছে। বিল্টু ও সুরজিৎ প্রথমে শপে ঢুকে শুভঙ্করকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে কাবু করে। তাঁকে বেঁধে ফেলার কাজ শেষ হলে ঢোকে শঙ্কর। পুলিশের দাবি, চার মাস আগে শঙ্কর ওখানে কাজ করত। তার দেড় মাসের বেতন বাকি ছিল। সেই রাগে বিল্টু ও সুরজিৎকে সঙ্গী করে টাকা লুট করে সে। শঙ্কর জানত, ওই সময়ে দোকানে কেউ থাকবেন না।

বিপণি সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার প্রবীণ সিংহ বলেন, ‘‘শঙ্কর আচমকা কাজে আসা বন্ধ করেছিল। কোম্পানির নিয়ম মেনে ওর টাকা বকেয়া ছিল। ওকে তাড়িয়ে দেওয়া বা দুর্ব্যবহার করা হয়নি। শঙ্কর এ কাজ করেছে জানার পরে আমরা অবাক।’’

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, লোডশেডিংয়ের জন্য শপের সিসি ক্যামেরায় ঘটনার সময়ের ফুটেজ রেকর্ড হয়নি। এলাকার একটি বাড়ি থেকে পুলিশ সেই ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে তিন যুবককে চিহ্নিত করা গিয়েছিল। দু’জনকে পিঠে ব্যাগ নিয়ে আইল্যান্ডের দিকে হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছিল। পিছনের ব্যক্তির পিঠে কিছু ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের থেকে ঘটনার দিন তারা যে পোশাক পরেছিল সেগুলির পাশাপাশি পিঠের ব্যাগ এবং মোবাইল উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ডাকাতির পরে দুষ্কৃতীরা সল্টলেক ফার্স্ট অ্যাভিনিউ ধরে এএ ব্লকের ভিতরের রাস্তা দিয়ে সল্টলেক ফার্স্ট গেটে পৌঁছয়। সেখান থেকে বাসন্তী কলোনি হয়ে খালপাড়ের রাস্তা ধরে উল্টোডাঙা থেকে ট্রেন ধরে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে এল, তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন