অপহরণের মামলায় যাবজ্জীবন

অপহরণের পরে মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারের চোখ বেঁধে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। চোখ বাঁধা অবস্থাতেই কোন কোন রাস্তা দিয়ে কোথায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ক’ধাপ সিঁড়ি এবং দুষ্কৃতীদের কথাবার্তা সব কিছুই ঠাওর করে রেখেছিলেন তিনি। সেই সূত্রের ভিত্তিতেই পুলিশ ধরে ফেলেছিল অপহরণকারীকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০২:৩৯
Share:

অপহরণের পরে মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারের চোখ বেঁধে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। চোখ বাঁধা অবস্থাতেই কোন কোন রাস্তা দিয়ে কোথায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ক’ধাপ সিঁড়ি এবং দুষ্কৃতীদের কথাবার্তা সব কিছুই ঠাওর করে রেখেছিলেন তিনি। সেই সূত্রের ভিত্তিতেই পুলিশ ধরে ফেলেছিল অপহরণকারীকে। বছর পাঁচেক আগে নিউ টাউন থানা এলাকা থেকে সেই অপহরণ এবং মুক্তিপণ নেওয়ার ঘটনায় সোমবার তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বারাসত আদালত। এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি শান্তময় বসু জানান, মাস চারেক আগে রাজীব দাস হত্যা মামলার পরে ফের এ দিন একই আদালত থেকে তিন জনকে যাবজ্জীবনের নির্দেশ দেওয়া হল।

Advertisement

২০১০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। অফিসের মধ্যে হঠাৎ শরীর খারাপ করায় বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরোন রাজারহাটের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপন দাস। সৌরভ বৈদ্য নামে অফিসেরই এক সহকর্মী সন্দীপনকে নিউ টাউনের ডিএলএফ-এর কাছে নামিয়ে দিয়ে যান। সেখান থেকে একটি ট্রাক্সি ধরেন সন্দীপন। ট্যাক্সিতে চালক ছাড়াও ছিলেন আর এক ব্যাক্তি। ট্যাক্সিটি গোলমাল করছে জানিয়ে উইপ্রোর কাছে থামানো হয়। সেই সময়ে আর এক ব্যাক্তিও সেখানে আসে। এর পরেই মুখ-চোখ বেঁধে ফেলা হয় সন্দীপনের। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বরানগরের এ কে মুখার্জি রোডের একটি বাড়িতে। এর পরেই সন্দীপনের বাড়িতে ফোন করে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায় দুষ্কৃতীরা। পরদিন নিউ টাউন থানায় অভিযোগ জানানো হয়। অনেক কথাবার্তার পরে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণে রাজি হয় দুষ্কৃতীরা। ২৮ জুন রাত ২টোর সময় ডানলপ মোড়ে আমলবাজারে অপহরণকারীদের হাতে ২ লক্ষ টাকা দেন সন্দীপণের স্ত্রী দেবশ্রী দাস। এর পরেই ২৩৪ নম্বর বাস রুটের কাছে চোখ-বেঁধে সন্দীপনকে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার তদন্তে নেমে সন্দীপন পুলিশকে পুরো ঘটনাটি বর্ণনা করেন। এর পরে ৩ মার্চ পুলিশ বরানগর থেকে সঞ্জয় পাল নামে এক অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। তার বালিশের ভিতর থেকে কিছু টাকা উদ্ধারও হয়। সঞ্জয়কে জেরা করে হাওড়ার ডোমজুড় থেকে মনোজ বাগ ও অমিত দাস নামে অন্য দু’জনকেও গ্রেফতার পরে পুলিশ। এর পরেই বারাসত আদালতে মামলাটির বিচার শুরু হয়। সোমবার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক প্রবীর মিশ্র অপহরণ মুক্তিপণের জন্য তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন