Crime

ঠাকুরপুকুরে অনটনে আত্মঘাতী বাবা-মা-ছেলে, মেঝেয় চকে লেখা সুইসাইড নোট

পুলিশের অনুমান, আর্থিক সঙ্কট এবং অসুস্থতা—সব মিলিয়ে মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন তিনজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ১৩:৩০
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন একই পরিবারের তিনজন। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরপুকুরের সত্যনারায়ণ পল্লিতে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আর্থিক সঙ্কট এবং অসুস্থতা— সব মিলিয়ে মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন তিনজন। যে ঘরে তাঁদের মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, সেই ঘরেই চক দিয়ে মেঝেতে লেখা ছিল সুইসাইড নোট।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন গোবিন্দ কর্মকার (৮০), তাঁর স্ত্রী রুনু কর্মকার (৭০) এবং ছেলে দেবাশিস কর্মকার (৫০)। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ বাড়ির দরজা ভেঙে একটি ঘর থেকে তিনজনের দেহ উদ্ধার করে। বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ঘটনাস্থলে একটি বাটি পাওয়া গিয়েছে। তার গায়ে লেখা ‘সাবধান, বিষ’। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে মৃতদের দেখে এবং পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ থেকে মনে করা হচ্ছে বিষ খেয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনজন।


স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিলেন গোবিন্দবাবু। তাঁর স্ত্রী রুনু পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছিলেন। ছেলে দেবাশিসও জন্ম থেকে পঙ্গু। জমানো টাকাই একমাত্র আর্থিক সংস্থান ছিল তাঁদের। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি স্ত্রী রুনু হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়। বেশ কিছু দিন তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেই সময়ে চিকিৎসার জন্য জমানো টাকার প্রায় সবই খরচ হয়ে গিয়েছিল। লকডাউনের মধ্যে তীব্র হয়েছিল আর্থিক সঙ্কটও।

Advertisement

আরও পড়ুন: সিএএ রাজনীতি মমতাকেই শরণার্থী করে দেবে, তোপ অমিতের​

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড মৃত্যু, দেশে করোনায় আক্রান্ত ২.৬৬ লক্ষ​

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, গোবিন্দবাবু নিজেও খুব সুস্থ ছিলেন না। গত রবিবার তিনি বাজারে গিয়ে রাস্তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর প্রতিবেশীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁর জ্বর থাকায় স্থানীয় বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি বলে অভিযোগ। এর পর আরও কয়েকটি হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের। তার পর বাড়িতেই ফিরে আসেন গোবিন্দবাবু। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আমাদের অনুমান আর্থিক সঙ্কট এবং অসুস্থতার জন্যই এই আত্মহত্যা। ময়নাতদন্তের পর আরও পরিষ্কার হবে গোটা ঘটনা।” পুলিশ মৃতদের আত্মীয়দের সঙ্গেও কথা বলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন