তোড়জোড়: ব্রিগেডে চলছে সমাবেশের প্রস্তুতি। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে কলকাতা ও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। কিন্তু আজ, শনিবার শাসক দলের ব্রিগেড সমাবেশে সেই বিধি কার্যকর থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁদের প্রশ্ন, জেলা থেকে যে সব বাস ও ছোট-বড় ট্রাকে চেপে সমর্থকেরা কলকাতায় আসবেন, সেগুলির বয়স কি ১৫ বছরের কম হবে?
কলকাতার মারাত্মক বায়ুদূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই মামলাতেই ওই নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। সুভাষবাবু শুক্রবার বলেন, ‘‘আমি পরিবেশ আদালতে এই বিষয়টি উত্থাপন করব। আর্জি জানাব, আদালত যেন এ ব্যাপারে সরকার পক্ষের রিপোর্ট তলব করে।’’
বস্তুত, এ বার শীতের মরসুম শুরুর আগে থেকেই কলকাতার বাতাস ধারাবাহিক ভাবে বিষিয়ে রয়েছে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বসানো বায়ুদূষণ পরিমাপক যন্ত্রে শুক্রবারও মারাত্মক দূষণ ধরা পড়েছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর, দিনভর ময়দান তল্লাটের বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার গড় পরিমাণ ছিল ৩০০-র বেশি। অর্থাৎ, মারাত্মক বেশি। আজ, শহরে অতিরিক্ত গাড়ি ঢুকলে সেই দূষণের মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে খবর।
এ ব্যাপারে পুলিশকর্তারা অবশ্য সরাসরি কিছু বলতে চাননি। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, প্রচুর গাড়ি সমাবেশে আসবে। সেগুলি আটকে দিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তা ছাড়া, সব গাড়ি ওই সময়ে পরীক্ষা করে ছাড়াও সম্ভব নয়। এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘হাতে গোনা কয়েকটি পুরনো গাড়ি ঢুকলেও সেগুলি তো চলবে না। কয়েক ঘণ্টা পরেই বেরিয়ে যাবে।’’
পরিবেশকর্মীদের পাল্টা যুক্তি, গাড়ি আটকানো না হোক, শহরে এবং পার্কিং লটে সিসিটিভি তো থাকবে। সেই ফুটেজ দেখে পরবর্তী কালে জরিমানা করা যেতে পারে।
পুলিশের একাংশ মুখে পরবর্তী কালে জরিমানা করার কথা বললেও আদৌ তা হবে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। তবে সুভাষবাবু বলছেন, ‘‘আদালত যদি সবিস্তার রিপোর্ট চায়, তা হলে এ সব প্রশ্নের উত্তর তো পুলিশ-প্রশাসনকে দিতে হবে।’’