ঘর মেলেনি, পথে বসলেন কাউন্সিলর

বরো অফিসে ঘর দেওয়া হয়নি তাঁকে। এই দাবিতে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ জানালেন শাসক দল তৃণমূলেরই এক কাউন্সিলর। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ স্কোয়ারের কাছে পুরসভার ৫ নম্বর অফিসের সামনের রাস্তায় দু’টো প্লাস্টিকের টুল নিয়ে বসে পড়েন ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপ্না দাস। ওই ঘটনার কথা চাউর হতেই রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান পুর-কর্তারা। দলের এক কাউন্সিলরের আচরণে মুখ বন্ধ রাখেন ওই বরোর ভাবী চেয়ারম্যান অপরাজিতা দাশগুপ্তও। আর মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে বলেন, ‘‘পুর-আইনে কোথাও বলা নেই কাউন্সিলরকে ঘর দিতে হবে। স্বপ্না এটা ঠিক করেনি।’’ যদিও পরে তিনি বলেন, ‘‘কী করা যায়, দেখছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০১:২০
Share:

রাস্তাতেই কাজ করছেন স্বপ্নাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

বরো অফিসে ঘর দেওয়া হয়নি তাঁকে। এই দাবিতে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ জানালেন শাসক দল তৃণমূলেরই এক কাউন্সিলর। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ স্কোয়ারের কাছে পুরসভার ৫ নম্বর অফিসের সামনের রাস্তায় দু’টো প্লাস্টিকের টুল নিয়ে বসে পড়েন ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপ্না দাস। ওই ঘটনার কথা চাউর হতেই রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান পুর-কর্তারা। দলের এক কাউন্সিলরের আচরণে মুখ বন্ধ রাখেন ওই বরোর ভাবী চেয়ারম্যান অপরাজিতা দাশগুপ্তও। আর মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে বলেন, ‘‘পুর-আইনে কোথাও বলা নেই কাউন্সিলরকে ঘর দিতে হবে। স্বপ্না এটা ঠিক করেনি।’’ যদিও পরে তিনি বলেন, ‘‘কী করা যায়, দেখছি।’’

Advertisement

ঘর না পাওয়া নিয়ে দিন কয়েক আগে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিজেপি ও সিপিএমের চার কাউন্সিলর। কিন্তু বিরোধী বলে তাঁদের দাবি ততটা গুরুত্ব পায়নি। প্রতিবাদে তাঁরাও পুরসভার স্থানীয় অফিসের সামনে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে কাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু নিজেদের দলেরই এক কাউন্সিলর সেই একই কায়দায় প্রতিবাদ করায় বিব্রত মেয়রও। বিষয়টি আর বাড়তে না দিয়ে বিক্ষুদ্ধ কাউন্সিলরকে দ্রুত নিজের অফিসে ডেকে পাঠান। পরে মেয়র বলেন, ‘‘ও নিজের ভুল স্বীকার করেছে। এটা ঠিক যে ওই ওয়ার্ডে ওর থাকার জায়গা নেই। একটা বসার জায়গা কী ভাবে দেওয়া যায় দেখছি।’’

যদিও প্রতিবাদী কাউন্সিলর স্বপ্না দাস মনে করেন, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘জনগণের কাছে দায়বদ্ধ আমি। যেখান থেকে জিতেছি, সেখানে আমার বসার কোনও জায়গা নেই। কাউন্সিলর হিসেবে নাগরিকদের কাজ তো করতে হবে। দিদি অর্থাৎ দলনেত্রী মানুষের জন্য অনেক কাজ রাস্তায় বসে করেছেন। বসার জায়গা নেই বলে সে পথই অনুসরণ করেছি।’’

Advertisement

পরপর তিন বার তিনটি ভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বিজয়ী হয়েছেন স্বপ্না। প্রথমে ২৯, পরে ৩৭ এবং এ বার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে। কিন্তু তিনি অন্য ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শপথ নেওয়ার পরেই বরোর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে দেখা করে অসুবিধার কথা জানানো হয়েছিল। ওই বরোতে ফাঁকা ঘরও রয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি।’’

যা শুনে মেয়র বলেন, ‘‘কাউন্সিলরকে ঘর দিতে হবে, এই দায় পুরসভার নয়। বিজেপি এবং সিপিএমের কাউন্সিলরও আমাকে জানিয়েছেন। তাঁদেরও একই কথা বলেছি।’’ ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির কাউন্সিলর অসীম বসু বলেন, ‘‘আগে তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা তো পুরসভার ঘর ব্যবহার করেছিল। তা হলে আমাদের ক্ষেত্রে এই অবস্থা কেন?’’ স্বপ্নাদেবীর আগেই ৭০, ৮৬ এবং ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি ও ১২৭ ওয়ার্ডের বাম কাউন্সিলর পুরসভার অফিসের সামনে টেবিল-চেয়ার নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। পুর সূত্রের খবর, স্বপ্নাদেবীর জন্য অবশ্য কলেজ স্কোয়ারে একটি ঘর দেওয়ার ভাবনা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন