Jagannath Temple in Kolkata

দিঘার পর কলকাতায় তৈরি হল জগন্নাথ মন্দির! সোমবার বুদ্ধপূর্ণিমায় দরজা খুলবে ভক্তদের জন্য, জানালেন উদ্যোক্তারা

এই মন্দিরের বিশেষত্ব হচ্ছে, কেবলমাত্র জগন্নাথদেবই পূজিত হবেন এই মন্দিরে। থাকবে না বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে মন্দির উদ্বোধনের ধর্মীয় আচার। পুরীর মন্দিরের ১২ জন পুরোহিতকে এই মন্দির উদ্বোধনের জন্য আনা হয়েছে। শনিবার অধিবাস দিয়ে শুরু হয়েছে মন্দির উদ্বোধনের প্রক্রিয়া।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৫ ১২:৫৭
Share:

কলকাতায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দির। —নিজস্ব চিত্র।

অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথধামের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মন্দিরের নির্মাণ থেকে শুরু করে উদ্বোধন পর্ব নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। দিঘার পর কলকাতাতেও তৈরি হল একটি জগন্নাথ মন্দির। দিঘার মন্দির তৈরির ক্ষেত্রে যেমন শাসকদলের সর্বোচ্চ নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগ অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও মন্দির তৈরিতে বড় ভূমিকা নিয়েছেন কলকাতার এক তৃণমূল নেতা। যিনি আবার বর্তমানে কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হওয়ার পাশাপাশি বোরো-১১-র চেয়ারম্যানও বটে। তিনি সুশান্ত ঘোষ। গত বছর নভেম্বর মাসে কসবায় নিজের বাড়ির সামনে আততায়ীদের গুলি থেকে কোনও ক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন এই কাউন্সিলর। ভাগ্যক্রমে নিজের বেঁচে যাওয়ার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের কৃপায় আস্থা রেখেছিলেন এই তৃণমূল নেতা। সে বার আততায়ীরা গুলি চালালেও, বন্দুক কাজ না করায় বেঁচে যান সুশান্ত।

Advertisement

তাঁর উদ্যোগে জগন্নাথ মন্দির তৈরি হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ভাগ্যক্রমে আততায়ীদের গুলির থেকে বেঁচে যাওয়ার কারণেই কি নিজের ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দপুরে এই মন্দিরটি তৈরি করিয়েছেন সুশান্ত? এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর বলছেন, ‘‘নভেম্বর মাসে আততায়ীদের গুলি থেকে বেঁচে যাওয়ার সঙ্গে এই মন্দির নির্মাণের কোনও সম্পর্ক নেই। যারা আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন, তাঁরা জানেন, আমি ধার্মিক মানুষ। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল প্রভু জগন্নাথের মন্দির তৈরি করার। মুখ্যমন্ত্রী যখন দিঘার জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজ শুরু করলেন, তখন থেকেই আমার মনেও মন্দির তৈরির বিষয়ে আগ্রহ তৈরি হল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বহু দিন ধরে মন্দির তৈরির ইচ্ছে থাকলেও জায়গার অভাবে তা করা যাচ্ছিল না। দেড় বছর আগে যখন মন্দির করার জন্য জায়গা পাওয়া গেল, তখন আবার সমস্যা ছিল অর্থের। আমি প্রচুর মানুষের কাছেও মন্দির নির্মাণের জন্য সাহায্য চেয়েছিলাম। তাঁরা সকলেই আমাকে সাহায্য করেছেন। এর ফলেই আনন্দপুরে প্রভু জগন্নাথকে আনতে সক্ষম হয়েছি। ঈশ্বর চেয়েছেন বলেই আমি এই মন্দিরের নির্মাণ করতে পেরেছি। তিনি না চাইলে কোনও কিছুই সম্ভব হত না।’’

প্রসঙ্গত, এই মন্দিরের বিশেষত্ব হচ্ছে, কেবলমাত্র জগন্নাথদেবই পূজিত হবেন এই মন্দিরে। থাকবে না বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি। কোনও মন্দিরের অনুকরণেও তৈরি হয়নি এই মন্দির। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে মন্দির উদ্বোধনের ধর্মীয় আচার। পুরীর মন্দিরের ১২ জন পুরোহিতকে এই মন্দির উদ্বোধনের জন্য আনা হয়েছে। শনিবার অধিবাস দিয়ে শুরু হয়েছে মন্দির উদ্বোধনের প্রক্রিয়া। রবিবার যজ্ঞানুষ্ঠানের পর হবে প্রাণপ্রতিষ্ঠা। আর সোমবার বুদ্ধপূর্ণিমার দিন উদ্বোধনের পর সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। রাজ্যের বাইরে থেকে নিমকাঠ দিয়ে জগন্নাথের মূর্তি তৈরি করিয়ে আনা হয়েছে মন্দিরে। সোমবার সকালে মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিনোদন জগৎ থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক জগতের পরিচিত খ্যাতনামীদের।

Advertisement

গত নভেম্বর মাসে আততায়ীদের গুলি থেকে বেঁচে যাওয়ার আগেও এক বার প্রাণ সংশয় হয়েছিল কাউন্সিলর সুশান্তের। ১৯৯৩ সালের একুশে জুলাই যুব কংগ্রেসের ডাকা কর্মসূচিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয় পুলিশের গুলিতে। সেই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে দু’মাসের বেশি সময় ভর্তি ছিলেন সুশান্ত। সে বার মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement