দুষ্কৃতীর গুলিতে নিহত তৃণমূল ছাত্রনেতা

হাওড়ার শিবপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হলেন তৃণমূলের এক ছাত্রনেতা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকেলে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম নাদিম আখতার (৩৫)। তিনি শিবপুরের কাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিবপুর শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৫ ০০:৫৭
Share:

নাদিম আখতার। — নিজস্ব চিত্র।

হাওড়ার শিবপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হলেন তৃণমূলের এক ছাত্রনেতা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকেলে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম নাদিম আখতার (৩৫)। তিনি শিবপুরের কাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর মা রশিদা বেগম জানান, প্রোমোটিং এবং জমির কারবারে যুক্ত ছিলেন নাদিম।

Advertisement

সেই সংক্তান্ত কোনও গোলমালের জেরেই এই খুন কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

তবে নাদিমের প্রোমোটিং ও জমির ব্যবসায় যুক্ত থাকার কথা জানেন না বলেই দাবি করেছেন হাওড়ার তৃণমূলের সভাপতি মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি জানান, নাদিম তাঁদের দলের পুরনো সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বললেন, ‘‘নাদিম মূলত ছাত্র রাজনীতি করত। কে বার কারা তাঁকে খুন করেছে পরিষ্কার নয়। পুলিশকে বলেছি তদন্ত করতে।’’

Advertisement

পুলিশ জানায়, শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ এক বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলে শিবপুর দীনবন্ধু কলেজের উল্টোদিকে একটি মাঠে আসেন নাদিম। মোবাইলে কারও সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। সেই সময়ে মুখে গামছা বেঁধে এসে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালায় দুই দুষ্কৃতী। গুলি লাগে নাদিমের গলায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়েরা তাঁকে কাছেই একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, এ দিন দুই দুষ্কৃতী টোটোয় চেপে ওই মাঠে এসে নাদিমদের জন্য অপেক্ষা করছিল। নাদিমরা আসতেই গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। প্রাণ বাঁচাতে নাদিমকে ফেলে রেখেই মোটরসাইকেল নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় নাদিমের ওই সঙ্গী। তবে দুষ্কৃতীরা কী ভাবে পালাল, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, নাদিমের ওই সঙ্গীকে জেরা করা হচ্ছে। নাদিম যে ওই জায়গায় আসবে দুষ্কৃতীরা তা জানল কী করে, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

নাদিমের মা রশিদা বেগম বলেন, ‘‘নিজের পাড়া, শিবপুরের কাজিপাড়া এলাকায় দু’তিনটি প্রোমোটিং করছিল ছেলে। তবে সেই ব্যবসায় কোনও গোলমাল ছিল বলে তো শুনিনি। কলেজের রাজনীতি নিয়ে ইদানিং নাদিম খানিকটা অশান্তির মধ্যে ছিল।’’ ঘটনার আকস্মিকতায় স্তম্ভিত গোটা এলাকা। ছেলের শোকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় নাদিমের বাবা মহম্মদ কাইসারকে।

প্রোমোটিং করলেও এলাকায় ছাত্র নেতা হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিল নাদিম। এলাকার লোকজনই জানান, দীনবন্ধু কলেজের তৃণমূলের সংগঠন চলত মূলত নাদিমের নেতৃত্বেই। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ জামশেদ খান বলেন, ‘‘খুব সাহসী ছেলে ছিল নাদিম। তবে ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে যে তাঁকে খুন হতে হবে, এমনটা আমরাও ধারনা করতে পারিনি।’’

নাদিমের খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় মানুষ এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি নিয়েও। তবে হাওড়া কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘নাদিমের ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন। তার সঙ্গে এলাকার আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন