ময়না-তদন্ত দ্রুত করতে পাঁচ মর্গের কাজ ভাগ

Share the five-morgue workশহরে অস্বাভাবিক মৃত্যুর যে কোনও ঘটনায় ময়না-তদন্তে যাতে দেরি না হয়, সেই জন্য মর্গগুলির কাজের চাপ তাদের মধ্যে যতটা সম্ভব সমান ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করল স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০২:৩১
Share:

—প্রতীকী ছবি

খুন, আত্মহত্যা বা নিছক দুর্ঘটনা। শহরে অস্বাভাবিক মৃত্যুর যে কোনও ঘটনায় ময়না-তদন্তে যাতে দেরি না হয়, সেই জন্য মর্গগুলির কাজের চাপ তাদের মধ্যে যতটা সম্ভব সমান ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করল স্বাস্থ্য দফতর। এই কাজ করা হয়েছে লালবাজারের প্রস্তাব মেনে। যেখানে শহরের ৭০টি থানাকে কলকাতার পাঁচটি মর্গের আওতায় প্রায় সমান সংখ্যায় ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে এত দিন কাঁটাপুকুর মর্গ ৩৮টি থানা এলাকার দেহের ময়না-তদন্ত করত। অথচ, এসএসকেএম পুলিশ মর্গে যেত একটি মাত্র থানা এলাকার মৃতদেহ। আর জি করের মর্গে যেত পাঁচটি থানা এলাকার দেহ। আবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ মর্গে ১০টি থানা এলাকারও দেহ যেত না। বাকি সব যেত এনআরএসের পুলিশ মর্গে।

নতুন ব্যবস্থায় মর্গগুলি যে ভাবে থানা এলাকা ভিত্তিক ময়না-তদন্ত ও মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষার কাজ করবে, সেই নির্দেশ গত শুক্রবার জারি করেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। এই কাজের পুনর্বণ্টনের প্রস্তাব যে ভাবে স্বাস্থ্য দফতরে জমা দিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ, সেটাই মানা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিকর্তার জারি করা ওই

Advertisement

নির্দেশে। বিশ্বরঞ্জনবাবু জানান, মর্গগুলির কাজ নতুন ভাবে ভাগ করলে ময়না-তদন্ত ও মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষা দ্রুত হবে।

লালবাজারের হিসেবে, কলকাতায় বছরে গড়ে ৭-৯ হাজার দেহের ময়না-তদন্ত করার দরকার হয়। কিন্তু পুলিশের দাবি, বছর চার-পাঁচ আগের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এখনও কাঁটাপুকুর মর্গ থেকে আসেনি।

সাড়ে তিন বছর আগে ঠাকুরপুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছিল ছিন্নমস্তক ও হাত-পা কাটা একটি দেহ। বিস্তর টানাপড়েনের পরে ওই ঘটনায় চলতি বছরের এপ্রিলে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের যুক্তি ছিল, চার মাস পরেও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়ায় সমস্যা হয়েছিল।

তদন্তকারীদের দাবি, এমন হয়েছে বহু ক্ষেত্রেই। অথচ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট দিতে হবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। একটি মর্গের দায়িত্বে থাকা অটোপ্সি সার্জনও মানছেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ সব সময়ে মানা সম্ভব হচ্ছিল না।’’

লালবাজারের বক্তব্য, স্বাধীনতার আগে থেকেই শহরে তিনটি মর্গের মধ্যে থানা এলাকা ভিত্তিক কাজ ভাগ করা ছিল। ২০০৭-এ আর জি কর ও ২০০৯-এ এসএসকেএম মর্গ চালু হয়। এর পরে ক্রমশ পুরনো একটি থানা ভেঙে নতুন একাধিক থানা হয়েছে, ২০১১ সালে

সংযোজিত এলাকার থানাগুলি এসেছে কলকাতা পুলিশের অধীনে। অথচ পরিস্থিতি অনুযায়ী মর্গগুলির থানা ভিত্তিক কাজের পুনর্বণ্টনের কথা ভাবা হয়নি।

নতুন ব্যবস্থায় এসএসকেএম মর্গ ১৫টি, কলকাতা পুলিশ মর্গ ১৭, এনআরএস মর্গ ১৫, আরজিকর ৯ এবং কাঁটাপুকুর ১৪টি থানা এলাকার দেহের ময়না-তদন্ত করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন