থমকে শহর। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
ভিড় বাস থেকে নেমে কেউ হনহন করে হাঁটতে শুরু করলেন। কেউ আবার ছোট বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে ছুটছেন হাসপাতালে, ‘ডাক্তারবাবু চলে যাবেন যে।’ আর যাঁর হাঁটা বা দৌড়নোর ক্ষমতা নেই, সেই মরণাপন্ন রোগী আটকে থাকলেন অ্যাম্বুল্যান্সে।
সপ্তাহ শুরুর প্রথম দিনেই যানজটে দুর্ভোগের শিকার হলেন কলকাতাবাসী। সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ শ্যামবাজার থেকে একটি ধর্মীয় সংগঠনের মিছিল শুরু হয়। আর একই সঙ্গে শুরু হয় যানজট ও যাত্রী দুর্ভোগ। পাইকপাড়া থেকে সেন্ট্রাল— ব্যস্ত দিনে কলকাতার রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি যাত্রী বোঝাই বাস, গাড়ি, এমনকী, বাদ নেই অ্যাম্বুল্যান্সও। বিকেল ৪টে নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় বলে জানায় কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ।
উত্তর কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হল শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়। আর ব্যস্ত সময়ে সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হয় সাধারণ মানুষের। যানজট সামাল দেওয়ার জন্য কিছু বাসের রাস্তাও বদলে দেয় ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু তাতেও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি বলেই জানান সাধারণ মানুষ। সোমবার যে এলাকায় তীব্র যানজটে নাজেহাল হলেন মানুষ সেই রাস্তায় আছে অনেকগুলি অফিস, কলেজ, হাসপাতাল। ফলে, ভুক্তভোগীদের তালিকায় রয়েছেন কলেজ পড়ুয়া থেকে অসুস্থ রোগীস সকলেই। এক ভুক্তভোগী জানাচ্ছেন, ‘‘আরজিকর হাসপাতালে যাওয়ার জন্য সকাল ১০টার আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুপুর ২’টোর সময়েও পৌঁছতে পারলাম না।’’ দীর্ঘ সময় পুল কারে বসে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েক জন স্কুলপড়ুয়া।
নগরবাসীর এই যন্ত্রণা দীর্ঘ দিনের। কখনও ‘রাজনৈতিক’, আবার কখনও ‘অরাজনৈতিক’ সংগঠনের পদযাত্রার চাপে প্রাণান্তকর অবস্থা শহরবাসীর। আর এই যন্ত্রণা কমানোর জন্য নানা রকম ঘোষণা, নির্দেশিকা সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হলেও তা যে আদৌ কার্যকর হয় না সোমবার তা আরও এক বার প্রমাণ করে দিল এই শহর।