বন্ধ পড়ে শৌচাগার, উদাসীন পুরসভা

কোথাও তালা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে পুরনো শৌচালয়। কোথাও আবার নতুন সুলভ শৌচাগার তৈরির পরেও বন্ধ তালা খুলল না। এমনই অভিযোগ উঠেছে, কলকাতা পুরসভার দু’টি ওয়ার্ড নিয়ে। সুলভ শৌচালয় রয়েছে পাশেই। তবু রাস্তার উপরেই অনেকে প্রস্রাব করছেন।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩৭
Share:

চালুই হয়নি নতুন শৌচাগার, ভরসা পুরনোই। ছবি: অরুণ লোধ।

কোথাও তালা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে পুরনো শৌচালয়। কোথাও আবার নতুন সুলভ শৌচাগার তৈরির পরেও বন্ধ তালা খুলল না। এমনই অভিযোগ উঠেছে, কলকাতা পুরসভার দু’টি ওয়ার্ড নিয়ে।

Advertisement

সুলভ শৌচালয় রয়েছে পাশেই। তবু রাস্তার উপরেই অনেকে প্রস্রাব করছেন। দৃশ্য দূষণের পাশাপাশি হচ্ছে পরিবেশ দূষণও। এ ছবি কলকাতা পুরসভার ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বকুলতলা বাজার সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয়দের দাবি, কাছেই বকুলতলা বাজার এবং বেশ কিছু দোকানপাটও রয়েছে ওখানে। ফলে খুবই প্রয়োজন ছিল একটি সুলভের। বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের দাবি মেনেই সেটি তৈরি হয়েছিল। তৈরির পরে তিন বছরও চালু ছিল না এটি। ফলে অনেকেই রাস্তায় দাঁড়িয়েই কাজ সারছেন।

১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি দ্বিতল শৌচালয় তৈরির পরে এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চালু হয়নি। এর মধ্যে একটি তিন-এ বাসস্টপ সংলগ্ন। এটি সিএসটিসি-র জমির উপরে সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। তিন-এ বাস ডিপোর কর্মীদের দাবি, প্রায় পাঁচ বছর আগে সরকারি বাস সংস্থাটির পক্ষ থেকে একটি শৌচালয় তৈরি করা হয়। সিএসটিসি-র অনুমোদিত একটি বেসরকারি সংস্থা এটির দেখভাল করত। তার পাশেই নতুন শৌচালয়টি তৈরি হয়েছে। কিন্তু শৌচালয়টি তৈরির পরে স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুরোধে পুরনো শৌচালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। নতুন শৌচালয়টি চালু না হওয়ায় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের ক্ষোভে আবার পুরনো শৌচালয়টি চালু করতে হয়।

Advertisement

১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বকুলতলার শৌচালয়টি তৎকালীন কাউন্সিলর সিপিএমের নির্মল মুখোপায়ের সময়ে হয়েছিল। নির্মলবাবু জানান, অনেক দিন ধরেই এটি বন্ধ। বলা হয়েছিল, নিকাশি লাইনের কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু এত বছরেও তা না সারানোয় স্বদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। পুরসভা সূত্রে খবর, জল বেরনোর ক্ষেত্রে বড় সমস্যা রয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছিল ঠিক করার। এ দিকে এই ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী স্বপনকুমার রায় বলছেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে ওয়ার্ডে কোনও কাজ যে হয়নি তারই প্রমাণ এই বন্ধ শৌচাগার। এত দিনেও ওয়ার্ডের হাইড্রেন তৈরি হল না। ফলে আউটলেট সারাতে পুরসভা ব্যর্থ।’’

১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের শৌচালয়গুলি প্রসঙ্গে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করছেন বিদায়ী কাউন্সিলর তৃণমূলের ঘনশ্রী বাগ। তিনি বলছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অহেতুক জটিলতা তৈরি হচ্ছে।’’ পুরসভার দাবি, ওটা সিএসটিসি-র জমি ঠিকই। তবে জমি বিতর্কে কোনও কথা বলতে চাননি কর্তৃপক্ষ। তবে এই ওয়ার্ডের তিনটি নতুন শৌচালয়ই উপযুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা না থাকায় চালু করা সম্ভব হয়নি বলে জানান পুর-কতৃর্পক্ষ। সিএসটিসি-র এমডি ভীষ্মদেব দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী জয় চৌধুরী বলেন, ‘‘নতুন শৌচাগারগুলি তৈরিই হচ্ছে জনগণ নয়, শাসক দলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। আসলে এগুলি নির্মাণের সময়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিজেদের কর্মীদের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন