অভিনেত্রীর ‘শ্লীলতাহানি’

শেষ দুই অঙ্কে চিহ্নিত এসইউভি, গ্রেফতার পাঁচ

গাড়ির পুরো নম্বর নয়, শুধু তার শেষ দু’টি অঙ্ক। এবং গাড়িটি স্টিল গ্রে রঙের এসইউভি। তদন্তে নেমে এটুকুই জানতে পেরেছিল পুলিশ। তার ভিত্তিতে এগিয়েই বাংলা সিরিয়ালের এক অভিনেত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হল পাঁচ যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:১৫
Share:

গাড়ির পুরো নম্বর নয়, শুধু তার শেষ দু’টি অঙ্ক। এবং গাড়িটি স্টিল গ্রে রঙের এসইউভি। তদন্তে নেমে এটুকুই জানতে পেরেছিল পুলিশ। তার ভিত্তিতে এগিয়েই বাংলা সিরিয়ালের এক অভিনেত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হল পাঁচ যুবক। সোমবার চারু মার্কেট ও লেক এলাকা থেকে তাঁদের ধরা হয়। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে ঘটনাটি ঘটে ৩১ ডিসেম্বর।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম শেখ সুরজউদ্দিন, শেখ সাহিলউদ্দিন, আনন্দ মণ্ডল, গৌতম নস্কর ও বিশ্বজিৎ দাস। গৌতম গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। তবে গাড়ির মালিক শেখ সামউদ্দিনের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত ঘটনার যোগ পায়নি পুলিশ। গাড়িটি কী ভাবে ওই যুবকদের হাতে এল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ৩১ ডিসেম্বর রাত ১টা নাগাদ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে ঢাকা কালীবাড়ির কাছে একটি ঠান্ডা পানীয়ের দোকানে যান ওই অভিনেত্রী ও তাঁর তিন বন্ধু। অভিযোগ, রাস্তার উল্টো দিকে থাকা কয়েক জন যুবক তাঁকে কটূক্তি করে। অভিনেত্রী বা তাঁর বন্ধুরা প্রথমে পাত্তা দেননি। কিন্তু কিছু পরে ওই যুবকেরা ফের কটূক্তি করলে প্রতিবাদ করেন তরুণী ও তাঁর বন্ধুরা। প্রথমে বচসা, তার পরে দু’পক্ষে হাতাহাতি বাধে। সে সময়ে ওই যুবকেরা অভিনেত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, ওই সময়ে আনোয়ার শাহ রোডের ওই জায়গায় লোকজন ছিল কম। অভিনেত্রী ও তাঁর বন্ধুরা চিৎকার করলেও গাড়ি চেপে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তরুণী প্রথমে অভিযোগ দায়ের করেন যাদবপুর থানায়। পরে জানা যায়, ঘটনাস্থল লেক থানার এক্তিয়ারে। তাই মামলাটি সেখানেই স্থানান্তরিত হয়।

এক তদন্তকারী জানান, ওই অভিনেত্রী শুধু গাড়ির নম্বরের শেষ দু’টি অঙ্ক জানাতে পেরেছিলেন। আর বলেছিলেন, স্টিল গ্রে রঙের এসইউভি। সেই সূত্র ধরে বেলতলার মোটর ভেহিক্‌লস অফিসে যোগাযোগ করে পুলিশ। রেজিস্ট্রেশন নম্বরের শেষ দু’টি অঙ্ক এবং গাড়ির ধরন ও রং মিলিয়ে প্রথমে গাড়িটি চিহ্নিত করা হয়। পুলিশ খবর পায়, সেটির রেজিস্ট্রেশন বেনিয়াপুকুরের এক ব্যক্তির নামে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, পুরনো গাড়ি কেনাবেচা করে, এমন একটি শো-রুমে মাস কয়েক আগে তিনি গাড়িটি বিক্রি করেছিলেন। সেখানে খোঁজ করে চারু মার্কেট এলাকার এক যুবকের হদিস মেলে। তার পরে বাকিদের।

এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘পুরনো গাড়িটি যিনি কেনেন, তাঁর নামে রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় অভিযুক্তদের পেতে সমস্যা হচ্ছিল।’’ তাদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, মারধর-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা হয়েছে।

ঢাকা কালীবাড়ির কাছে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ওই তল্লাটে আলো কম, তুলনামূলক ভাবে নির্জনও। দোকানদারদের একাংশের অভিযোগ, রাত বাড়লেই ওই মোড়ে কয়েক দল যুবক চিৎকার করে আড্ডা দেন, মদ্যপানও করেন। কিছু দিন আগে ওখানে দু’দল যুবকের মধ্যে গোলমাল হয়। অভিযোগ, মদের বোতল নিয়ে দু’পক্ষ পরস্পরকে আক্রমণও করে। ব্যবসায়ীদের মতে, পুলিশি টহলদারি আরও বাড়ানো উচিত। যদিও এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘নজরদারি আছেই। ভ্যানে করে রাতে টহল দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন