রাস্তার দশা এমনই। —নিজস্ব চিত্র।
পাইপ বসানোর কাজ শেষ হয়েছে মাস দুয়েক আগে। কিন্তু তার পরে আর রাস্তা সারাইয়ের নামগন্ধ নেই কলকাতা পুরসভার। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের তপসিয়া রোড, পিকনিক গার্ডেন রোড, জি জে খান রোড, সি এন রায় রোডে খানাখন্দে ভরা বেহাল দশায় অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারা। বড় রাস্তা থেকে অলিগলি, সর্বত্রই একই হাল।
৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে পরিস্রুত জলের চাহিদা মেটাতে তপসিয়ায় ২ মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি হয়েছে আগেই। বুস্টার পাম্পিং স্টেশন থেকে ওয়ার্ডে জল সরবরাহের জন্য
বসেছে নতুন পাইপলাইন। অভিযোগ, সেই কাজ শেষ হওয়ার পরেও ওয়ার্ডের অধিকাংশ জায়গায় রাস্তা মেরামতি শুরু হয়নি। ফলে হয়রান হচ্ছেন এলাকাবাসী।
তপসিয়া রোডের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদের কথায়, ‘‘বাইপাস থেকে তপসিয়ায় ঢোকার মূল রাস্তা তপসিয়া রোড। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা মেরামত না হওয়ায় যানচলাচলের ফলে ধুলোয় ভরে যাচ্ছে এলাকা। বাড়ছে পরিবেশ দূষণ।’’ মূল রাস্তার পাশাপাশি তপসিয়ার অলিগলি সর্বত্রই ছোটবড় গর্তে ভরা। একই চেহারা রাইচরণ ঘোষ লেন, বাঁশবাগান, কুস্টিয়া মসজিদ বাড়ি লেন, শিবতলা লেনেরও।
কোথাও আবার পাইপ বসানোর পরে মাটি দিয়ে ঠিকমতো ভরাট করা হয়নি। রাস্তার উপর থেকেই দেখা যাচ্ছে পাইপ। তপসিয়া ফার্স্ট লেন ও তপসিয়া রোডের সংযোগস্থলে ছবিটা এমনই। জি জে খান রোডের বাসিন্দা জাভেদ আলমের অভিযোগ, ‘‘কবে পাইপ বসেছে। অথচ এখনও রাস্তা সারানো হল না।’’ জি জে খান রোডের আর এক বাসিন্দা সৈয়দ খুরশিদ আলমের সাফ কথা, ‘‘যেখানে-সেখানে গর্ত থাকায় রাস্তায় চলাফেরাই দায় হয়ে পড়েছে। দিন কয়েক আগে একটি বাচ্চা স্কুলে যাওয়ার পথে পড়ে গিয়ে চোট পায়।’’
রাস্তা সারাইয়ে এত দেরি কেন? স্থানীয় বিধায়ক তথা দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান বা মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষের সাফাই, ‘‘পাইপ বসানোর পরে রাস্তা সারাইয়ের জন্য সময় দেওয়া দরকার। না হলে রাস্তা বসে যেতে পারে।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক বন্দোপাধ্যায় অবশ্য পাইপ বসানোর পর রাস্তা সংস্কারে দু’মাস সময়টা খুব বেশি বলে মনে করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাস্তা খঁুড়ে পাইপ বসানোর পরে মেরামতির জন্য পনেরো দিন সময় দেওয়া যায়। আবার জরুরি ক্ষেত্রে তার কম সময়েও সারানো যায়। তপসিয়ার ক্ষেত্রে দু’মাস সময়টা অত্যধিক বেশি।’’
মেয়র পারিষদ (ইঞ্জিনিয়ারিং) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তা সারানোর কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে।’’ তবে পুরভোটের মুখে রাস্তা সংস্কারের কাজ কবে শুরু হবে, তা নিয়ে সংশয়ে তপসিয়ার বাসিন্দারা। এমনিতেই ওই এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে জল জমে। রাস্তা সারানো না হলে বৃষ্টি হলে ভোগান্তি বাড়বে বলে মনে করছেন এলাকার মানুষ।