ট্রিটমেন্ট প্লান্ট অকেজো, নর্দমার জল মিশছে গঙ্গায়

শোচনীয় অবস্থা উত্তর কলকাতার সর্বমঙ্গলা ঘাটের। শুধু ওই ঘাটই নয়। খোদ কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছেন, কলকাতা শহরের মধ্যে বেশ কিছু এলাকায় খোলা নর্দমা থাকায় সেখান থেকে নিকাশির জল সরাসরি গিয়ে গঙ্গায় মিশছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

খোলা নর্দমা। গোটা এলাকার নিকাশির জল সেখান দিয়ে গিয়ে সরাসরি মিশছে গঙ্গায়। ছবিটা বেশি স্পষ্ট হয় নদীতে ভাটার সময়ে। নর্দমার জলে ভেসে আসা যাবতীয় আবর্জনা স্তূপীকৃত হয়ে থাকে গঙ্গার ধারে। জোয়ার এলে ফের তা মিশে যায় জলে। যা থেকে ছড়ায় দূষণ।

Advertisement

এমন শোচনীয় অবস্থা উত্তর কলকাতার সর্বমঙ্গলা ঘাটের। শুধু ওই ঘাটই নয়। খোদ কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছেন, কলকাতা শহরের মধ্যে বেশ কিছু এলাকায় খোলা নর্দমা থাকায় সেখান থেকে নিকাশির জল সরাসরি গিয়ে গঙ্গায় মিশছে। প্রসঙ্গত, গঙ্গা দূষণ রুখতে নিকাশির জল পরিশোধন না করে গঙ্গায় ফেলার নিয়ম নেই। কিন্তু পরিবেশকর্মী এবং বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, সেই নিয়ম প্রায় কোথাও মানা হয় না। নিকাশির জল পরিশোধনের জন্য ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’ (গ্যাপ)-এর অধীনে শহরে বেশ কয়েকটি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কেএমডিএ কর্তৃপক্ষই দাবি করেছেন, সেগুলির বেশিরভাগই অকেজো। এমনকি সর্বমঙ্গলা ঘাটের কাছে বরাহনগরে নিকাশির জল শোধনের ট্রিটমেন্ট প্লান্টটি খারাপ থাকায় গঙ্গায় মিশছে সেই নোংরা জল। যা থেকে নদী তো বটেই, এলাকাও দূষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জানান, কলকাতা এবং তার আশপাশে মোট চারটি খালে দূষণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সেগুলি হল টালি নালা, বেলেঘাটা খাল, বালি খাল এবং বটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে নাজিরগঞ্জ খাল। এই খালগুলির প্রতিটি গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। গঙ্গায় জোয়ার-ভাটার সময়ে খালে জলের পরিমাণেও হেরফের হয়। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘নিকাশির জল থেকে দূষণ ছড়ানোর ব্যাপারে যে সমীক্ষা করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে শহরের প্রায় ২০০টি নর্দমার জল অপরিস্রুত অবস্থায় গঙ্গায় মেশে। ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পে অবিলম্বে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানো না হলে গঙ্গাকে বাঁচানো যাবে না। তবে দূষণ ঠেকানোর এই বিষয়টি নিয়ে বহু দিন যাবৎ টানাপড়েন চলছে। তাই এই পরিকল্পনা কত দূর ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে আশঙ্কাও থাকছে।’’

Advertisement

যদিও কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ বলছেন, ‘‘সম্প্রতি ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেগুলি তৈরি হলে নিকাশির জল সরাসরি গঙ্গায় পড়বে না। ভোটের আগে দরপত্র সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হয়েছে। ভোট মিটলেই কাজ শুরু হবে। বছরখানেকের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন