শুরু হল মাঝেরহাটে ব্রিজ তৈরির তোড়জোড়। —নিজস্ব চিত্র
মাঝেরহাটে বিকল্প পথের উপরে অস্থায়ী সেতু তৈরি করবে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স। বুধবার সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিপিনকুমার সাক্সেনা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। ১০-১২ দিনের মধ্যে সেতু নির্মাণ করে দেওয়া সম্ভব।’’
বিপিনকুমার জানান, মাঝেরহাটে চেতলা বোট ক্যানালের উপরে ৮০ ফুট লম্বা ও সা়ড়ে ৪ মিটার চওড়া দু’টি ‘বেইলি ব্রিজ’ তৈরির কথা বলা হয়েছে। সংস্থা সূত্রের খবর, এগুলি ‘প্রি ফ্যাব্রিকেটেড’ ইস্পাত সেতু। বিভিন্ন অংশ জুড়ে ভিতের উপরে বসিয়ে দিলেই সেতু তৈরি হয়। আলাদা করে ঢালাই বা নির্মাণের দরকার হয় না। এক-একটি সেতু প্রায় ৮৭ টন ভার বহনে সক্ষম। তার উপর গিয়ে গাড়ি অনায়াসে যেতে পারবে। দু’টি সেতুর জন্য রাজ্য সরকারকে প্রায় ২ কোটি টাকা দিতে হবে।
জোড়া বেইলি ব্রিজ বেহালার যানজট কমাতে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মনে করছে রাজ্য। একটি ব্রিজ হওয়ার কথা মাঝেরহাট ব্রিজের ঠিক পূর্বে হুমায়ুন কবীর সরণি ও রাজা সন্তোষ রায় রোডকে জুড়ে। অন্যটি আরও প্রায় ৫০০ মিটার পূর্বে হুমায়ুন কবীর সরণির সঙ্গে আলিপুর অ্যাভিনিউকে জুড়ে। তবে রেল সূত্রে বলা হচ্ছে, আপাতত দ্বিতীয় জায়গাতেই লেভেল ক্রসিং তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ববির পরে শোভনকে তির এ বার জাভেদের
জাহাজ কারখানা সূত্রের খবর, বেইলি ব্রিজের জন্য মাঝেরহাটে রেললাইনের উপরে সেতুর ভিত তৈরি করা হচ্ছে। সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারেরা সেখানে নজরদারির জন্য থাকছেন। সমন্বয় করা হচ্ছে পুলিশ ও পূর্ত দফতরের সঙ্গেও।
দেশে সরকারের অধীন জাহাজ কারখানাগুলির মধ্যে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স প্রথম সারিতে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, তারা কি সেতু নির্মাণেও দক্ষ? সংস্থার কর্তাদের দাবি, অস্থায়ী ইস্পাতের সেতু, ইঞ্জিনও তাঁরা সুনামের সঙ্গেই তৈরি করেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে সেতু তৈরি সম্ভব কি না জানতে চাওয়া হলে তাঁরা বলেন, এ ধরনের ‘প্রি ফ্যাব্রিকেটেড’ সেতু মোটামুটি তৈরিই ছিল। যেটুকু কাজ বাকি, তা-ও দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। বিপিনকুমারের কথায়, ‘‘এই ধরনের সেতুর ক্রেতা ছিলই। কিন্তু যে হেতু এই সেতু কলকাতার জনজীবন স্বাভাবিক করার জন্য অপরিহার্য, তাই রাজ্যকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ছাইয়ের তলায় এখনও চোখ রাঙাচ্ছে আগুন
বেইলি ব্রিজ তৈরির পাশাপাশি মাঝেরহাট সেতু ভাঙার তোড়জো়ড়ও শুরু হয়েছে। ‘জ ক্রাশ’ পদ্ধতিতে এই সেতু ভাঙা হবে। দেশে মাত্র কয়েকটি সংস্থার হাতেই এই প্রযুক্তি রয়েছে। মুম্বইয়ের একটি সংস্থা সেতু ভাঙার বরাত পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সংস্থার প্রতিনিধিদের শহরে আসার কথা। তবে দিন রাত এক করে কাজ করলেও এক মাসের মধ্যে সেতু ভেঙে ফেলা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা।