প্রতীকী ছবি।
সূত্রটা মাস দুয়েক আগে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আর সেটা ধরে এগিয়ে মঙ্গলবার বাজিমাত করেছে লালবাজারের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। কলকাতা স্টেশনে তাদের হাতে ধরা পড়েছে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারুল্লা বাংলা টিম’ বা এবিটি-র দু’জন সন্দেহভাজন সদস্য।
ডিসি (এসটিএফ) মুরলীধর শর্মা এ দিন জানান, তখন দুর্গাপুজো প্রায় শেষ। প্রস্তুতি চলছে অনূর্ধ্ব-১৭ যুব বিশ্বকাপ ফুটবলের। সেই সময়ে সাবসিডিয়ারি ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (এসআইবি) খবর দিল, জঙ্গি সংগঠনের সদস্য দুই বাংলাদেশি ভারতের অন্য কোনও জায়গা থেকে কলকাতায় ঢুকবে বা ইতিমধ্যেই ঢুকে গিয়েছে। সেই মতো কলকাতা ও তার আশপাশে জরুরি ভিত্তিতে নজরদারি শুরু করে এসটিএফ। অতি সক্রিয় হতে বলা হয় সব ‘সোর্স’-কে। শেষ ২০-২৫ দিন সব চেয়ে জোরদার হয় তল্লাশি অভিযান। হোটেল, রেস্তোরাঁ, বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়। তিন-চার দিন আগেই খবর আসে, এক অস্ত্র কারবারিকে কলকাতা স্টেশনে আসতে বলেছে দুই বাংলাদেশি। তিন জনই ধরা পড়ে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এবিটি-র সন্দেহভাজন সদস্য দুই বাংলাদেশি এক মাস ধরে কলকাতাতেই ছিল। তবে কোনও হোটেলে নয়, কখনও রেল স্টেশন, কখনও বাসস্ট্যান্ড, কখনও ফুটপাথে তারা দিন কাটাচ্ছিল। ধৃতদের মধ্যে এবিটি-র অন্যতম চাঁই যে, সেই তনবির ওরফে সাবসাদ মিয়াঁ পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।
গোয়েন্দারা জানান, এবিটি-র ওই দুই সদস্য বিভিন্ন রাসায়নিক কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, যা দিয়ে বিস্ফোরক তৈরি করা যায়। সেই সঙ্গে তারা ইডেন গার্ডেন্স, ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের মতো শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বারবার যাচ্ছিল। সে ক্ষেত্রে কি কলকাতা তথা এই রাজ্যে কোনও নাশকতা ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবিটি?
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে বড়সড় কিছু ঘটানোর প্রস্তুতিই এ দেশে থেকে নিচ্ছিল এবিটি। সে দেশে পুলিশি ধরপাকড়ের চাপেই তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছে। তবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তারা বারবার যাচ্ছিল কেন, সেটা দেখা হচ্ছে। বিস্ফোরক ও বোমা কী ভাবে তৈরি করতে হবে, সেই সংক্রান্ত আল -কায়দার বইও ধৃতদের কাছে মিলেছে।
ধৃতদের আজ, বুধবার দুপুরে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে।