একটি শিশুর জন্য ‘বন্ধু’ দুই চির-প্রতিদ্বন্দ্বী

তিন বছরের শিশুকে বাঁচাতে যেন এক হয়ে গিয়েছে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল! দলাদলি ভুলে দুই ক্লাবের ফুটবলার, কর্মী-সমর্থকেরাই ওই শিশুটির প্রাণ বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এসেছেন।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৩
Share:

আরুষি দাস

তিন বছরের শিশুকে বাঁচাতে যেন এক হয়ে গিয়েছে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল! দলাদলি ভুলে দুই ক্লাবের ফুটবলার, কর্মী-সমর্থকেরাই ওই শিশুটির প্রাণ বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এসেছেন।

Advertisement

জন্ম থেকেই দু’টি কিডনি খারাপ বেহালার আরুষি দাসের। বয়স তিন বছর ছুঁতে না ছুঁতেই ১০০-রও বেশি ডায়ালিসিস হয়ে গিয়েছে তার। এর পরে চিকিৎসকেরাও জানিয়ে দিয়েছেন, এখন আর ডায়ালিসিসেও কাজ হবে না। দরকার কিডনি প্রতিস্থাপন। আরুষির বাবা সঞ্জয় দাস নিজের একটি কিডনি মেয়েকে দান করছেন।

ইতিমধ্যেই ডায়ালিসিস ও কিডনির অন্যান্য চিকিৎসায় লাখ দশেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে ওই পরিবারের। বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতাল জানিয়ে দিয়েছে, কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ হবে আরও লাখ দশেক। কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে সেই টাকা কিছুতেই জোগাড় হয়ে উঠছে না। এই পরিস্থিতিতেই মুশকিল আসান হয়ে উঠেছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ফুটবল দল।

Advertisement

কী ভাবে?

আরুষির কাকা সন্দীপ দাস মোহনবাগান ক্লাবের সদস্য। তিনিই নিজের ক্লাবের কর্মকর্তা এবং ফুটবলারদের আরুষির অসুস্থতার বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ময়দানে মুখে মুখে ঘুরে আরুষির বৃত্তান্ত পৌঁছে যায় ইস্টবেঙ্গলের অন্দরেও। মোহনবাগানের গোলকিপার শিলটন পাল বা ইস্টবেঙ্গলের মেহতাব হোসেন নিজেরা টাকা দিয়েছেন। দলের তরফেও আরুষির চিকিৎসার জন্য টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শিলটনের কথায়, ‘‘ওঁদের পরিবার মোহনবাগানের সমর্থক। অর্থাৎ, এই মেয়েটি মোহনবাগানের মেয়ে! ওঁদের এই সঙ্কটের কথা জেনে মনে হয়েছিল, এই সঙ্কটের সময়ে পাশে দাঁড়াই। সেই মানসিকতা থেকেই ওঁদের বাড়ি গিয়েছিলাম। আমার তরফে যা দেওয়ার দিয়েছি, দলের তরফেও খুব শীঘ্রই দেওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন: গাফিলতি, প্রত্যাখ্যানে হাতে পচন

আরুষির কাকা সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘এখনও আরও অনেক টাকা জোগাড় করতে হবে। কারণ ও এতটাই ছোট যে ডাক্তারেরা বলেছেন, যে কোনও সময়ে অবস্থার অবনতি হতে পারে। তখন স্বাভাবিক ভাবেই খরচটাও আরও বেড়ে যাবে। আমরা সব দিক থেকে তৈরি হয়ে থাকতে চাইছি। জানি না সেটা কী ভাবে সম্ভব হবে।’’

শিশুদের কিডনি প্রতিস্থাপন এমনিতে খুবই জটিল বিষয়। পূর্বাঞ্চলে খুব বেশি জায়গায় তা হয়ও না। এই পরিস্থিতিতে ছোট্ট আরুষির অস্ত্রোপচার চিকিৎসকদের কাছেও একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

ডাক্তারদের বক্তব্য, ওঁরা কলকাতার চিকিৎসা ব্যবস্থার উপরে ভরসা রেখেছেন। সেই ভরসার মর্যাদা রাখতেই হবে।

সেই আশাতেই সুস্থ জীবনের অপেক্ষায় রয়েছে তিন বছরের শিশুটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন